ঢাকা: গুহায় পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক মানুষের পদচিহ্ন সে সময়কার মানুষ ও তার বিবর্তনের ইতিহাস বর্ণনা করে। পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা কয়েক দশক ধরে দক্ষিণ ফ্রান্সের পেচ মারলে গুহার প্রাচীন পদচিহ্ন নিয়ে গবেষণা করে আসছেন।
সম্প্রতি এ গুহায় পরীক্ষা করার সময় তিনজন আদিবাসী পেশাদার ট্র্যাকার বিজ্ঞানীদেরকে পাঁচটি নতুন পদচিহ্নের সন্ধান দেন, যেগুলো আগে উপেক্ষিত হয়েছে। চিকেই, জুনতা ও থাও নামের নামিবিয়ার জু / ‘হোয়ানসি সান সম্প্রদায়ের ওই তিন ট্র্যাকার প্রাচীন পদচিহ্নের বিষয়ে যত্নশীল বিশ্লেষণও দেন।
নতুন এই প্রাগৈতিহাসিক পদচিহ্নগুলো আফ্রিকার শিকারি ও সংগ্রহকারী সম্প্রদায়ের মানুষ সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য দিতে শুরু করেছে।
জার্মানির মেটম্যানের নিয়ান্ডারথাল মিউজিয়ামের আন্দ্রিয়াস প্যাস্ট্রুস ও তার সহকর্মীরা প্রাচীন পদচিহ্নগুলো নিয়ে কম্পিউটারে ইমেজিং প্রযুক্তিতে গবেষণা করছেন।
তাদের প্রাথমিক বিশ্লেষণ, ১৫ হাজার বছর আগের মানুষের পদচিহ্ন এগুলো। প্রাগৈতিহাসিক সময় সম্পর্কে ধারণা পুনর্গঠনে এগুলো কাজে লাগতে পারে।
আন্তর্জাতিক পাক্ষিক জার্নাল কোয়াটারনারিতে পেচ মারলে গুহার নতুন এই আবিষ্কারের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, প্রতিটি পদচিহ্নের আকার ও আকৃতির ওপর ভিত্তি করে চিকেই, জুনতা ও থাও বিশ্বাস স্থাপন করেন যে, পদচিহ্নগুলো যাদের, প্রত্যেক ব্যক্তির বয়স ও লিঙ্গ শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা।
একজন বৃদ্ধ লোক, দু’জন তরুণী নারী, একজন যুবক ও একজন শিশু ১৫ হাজার বছর আগে গুহার মধ্য দিয়ে নগ্নপদে চলে যাওয়ার সময় তাদের পায়ের ছাপ পড়ে যায়। শিশুটিকে গতি পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হলে সে তাই করে।
আগের গবেষণায় মাত্র একজন বা দু’জনের পদচিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। ট্র্যাকাররা এই প্রথম জানালেন, সেগুলোর আকার ও আকৃতির প্রিন্ট থেকে তারা নিশ্চিত যে, পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন প্রাচীন মানুষ গুহার মেঝেটি অতিক্রম করেছিল।
প্যাস্ট্রুস ও তার সহকর্মীরা বলছেন, ‘জু / ‘হোয়ানসি সান সম্প্রদায়ের ট্র্যাকারদের আরও প্রাচীন পদচিহ্নের ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। প্রকৃত অর্থেই পেচ মারলে’র প্রাচীন মানুষ সম্পর্কে আমাদের বোঝার ক্ষেত্রে চিকেই, জুনতা ও থাও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন’।
‘গবেষণার এ পদ্ধতির মধ্যে ট্র্যাকার আদিবাসীদের জ্ঞান একীভূত করা হচ্ছে। এটি প্রত্নতত্ত্বের একটি নতুন সংকর পদ্ধতি, যেটি আদিবাসীদের জ্ঞানের সঙ্গে নতুন প্রযুক্তির সম্মিলনের একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ’।
‘আমরা এমন একটি সঙ্করীকরণের মাধ্যমে বিজ্ঞানের সম্মিলিত গবেষণার প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা ২০১৭ সালের মে থেকে শুরু হতে যাচ্ছে’- বলেন প্যাস্ট্রুস।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
এএসআর