ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

প্রাগৈতিহাসিক মানবহ্রদ

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৬
প্রাগৈতিহাসিক মানবহ্রদ

কেনিয়ার তুরকানা হ্রদে পাওয়া জীবাশ্ম মানুষের বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক যুগের সূচনা করেছে। এখানে আবিষ্কৃত জীবাশ্ম বলছে, বিবর্তনের চার মিলিয়ন বছর আগে থেকে মানুষের সঙ্গেই চলমান ছিল হ্রদটি।

কেনিয়ার তুরকানা হ্রদে পাওয়া জীবাশ্ম মানুষের বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক যুগের সূচনা করেছে। এখানে আবিষ্কৃত জীবাশ্ম বলছে, বিবর্তনের চার মিলিয়ন বছর আগে থেকে মানুষের সঙ্গেই চলমান ছিল হ্রদটি।

বিপুল পরিমাণ নমুনা-নিদর্শন সম্বলিত সেই স্পট এটি, যা আমরা কোথা থেকে এসেছি, কিভাবে আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষরা বসবাস করতেন সেসব সম্পর্কে আমাদেরকে জানাচ্ছে। উত্তর কেনিয়ার মরুভূমি হ্রদ তুরকানা তাই যেন এক প্রাগৈতিহাসিক মানবহ্রদ।

তুরকানায় আবিষ্কৃত জীবাশ্মটি ছিল একজন অল্পবয়স্ক ছেলের একটি কঙ্কাল। সে মারা যায় প্রায় আট বছর বয়সে এবং তার মরদেহ হ্রদের বর্জ্যের মধ্যে ডুবে যায়।   সেখানে দেড় মিলিয়ন বছর ধরে সংরক্ষিত ছিল।

ছেলেটি ছিল আমাদের সবচেয়ে সরাসরি পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাস মানব প্রজাতির সদস্য। এটিও ছিল এ মানুষদের সম্পূর্ণ জীবাশ্ম আবিষ্কারের প্রথম ঘটনা।

অনেক দিন ধরে আমাদের কাছে আমাদের পূর্বপুরুষদের এ প্রজাতিটি অধরা ছিল। অনেক প্রাণীর লম্বা জীবাশ্ম আগে মাটির তলা থেকে আবিষ্কৃত হলেও এদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের দেহাবশেষ মাটিতে আক্ষরিকভাবেই পাতলা হয়। বিরল মানুষদেরকে সম্পূর্ণ করতে তাই তাদের কয়েক ডজন টুকরা একসঙ্গে উদ্‌ঘাটিত করা আবশ্যক ছিল।

তুরকানা হ্রদ আজ শুষ্ক, প্রতিকূল মরুভূমির পরিবেশ সেখানে বিদ্যমান। কিন্তু এটি সব সময় ছিল না। প্রায় দুই লাখ বছর আগে হ্রদটি অনেক বড় ছিল এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা সবুজ ছিল। জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তন কিছু সময় পর পর হ্রদটি সঙ্কুচিত এবং মাঝে মাঝে এটি পুরাপুরি অদৃশ্য হয়েছে।

তারপরও মানবজীবনের ঊষালগ্নের মতোই হ্রদটি আমাদের সঙ্গে চলবে শেষ দিন পর্যন্ত।

আর্দ্র সময়ে এটি প্রথমদিকে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একটি আদর্শ জায়গা ছিল। এবং যখন তারা মারা যায়, এটি তাদের দেহাবশেষ ফসিলাইজ করার জন্য একটি নিখুঁত জায়গা ছিল। এটি এজন্য যে, তুরকানা হ্রদ একটি আগ্নেয় এলাকা, যেখানকার টেকটনিক কার্যকলাপ ভূ-ত্বক সরানো ও নতুন লেয়ার তৈরি করতে পারে।

এ ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এটি থেকে এ তিনটি স্তরের বিভিন্ন সময়কালের জীবাশ্ম পাওয়া যায়।

যুক্তরাজ্যের লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের জীবাশ্ম প্রকাশক ফ্রেড স্পুর বলেন, ‘ভারি বৃষ্টিপাতের সময়কাল থেকে এ স্তর অনেক ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। ওই সময়কার বালিতে কবর দেওয়া মানুষের হাড় পাওয়া যায়, যা পরে বেলেপাথরে পরিণত হয়ে থাকতে পারে। ফলে জীবাশ্ম পাওয়ার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়’।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
এএসআর/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।