ব্রিটিশ মিউজিয়ামের নিকোলাস অ্যাস্টন ও তার দল যুক্তরাজ্যের নরফোক উপকূলের প্রাগৈতিহাসিক গ্রাম হাপিসবার্গে প্রাচীন মানুষের পদচিহ্ন নিয়ে গবেষণা করছেন। এ গবেষণায় তারা নতুন এক পদ্ধতির চর্চা করছেন, যেখানে ট্র্যাকার আদিবাসীদের জ্ঞানকে নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূত করা হচ্ছে।
আদিবাসীদের জ্ঞানের সঙ্গে প্রযুক্তির সম্মিলনের নতুন পদ্ধতিটির যথার্থতাও পেয়েছেন নিকোলাস অ্যাস্টন। তিনি বলেন, ‘আধুনিক শিকারি ও সংগ্রহকারী আদিবাসী গোষ্ঠীগুলো থেকে আসা পেশাগত ট্র্যাকাররা ও তাদের ব্যাখ্যা সাতিশয় নির্ভরযোগ্য। প্রাগৈতিহাসিক পদচিহ্নকে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে তারা সক্ষম ও আকর্ষণীয়’।
এ ধরনের পদ্ধতি প্রথম শুরু করেন জার্মানির মেটম্যানের নিয়ান্ডারথাল মিউজিয়ামের আন্দ্রিয়াস প্যাস্ট্রুস ও তার সহকর্মীরা। দক্ষিণ ফ্রান্সের পেচ মারলে গুহায় পাওয়া নতুন পাঁচটি প্রাচীন পদচিহ্ন পদচিহ্ন নিয়ে কম্পিউটারে ইমেজিং প্রযুক্তিতে গবেষণা করছেন তারা। তাদেরকে নতুন ওই পদচিহ্নগুলোর সন্ধান দিয়ে সেগুলো সম্পর্কে যত্নশীল বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা দেন নামিবিয়ার জু / ‘হোয়ানসি সান সম্প্রদায়ের তিনজন আদিবাসী পেশাদার ট্র্যাকার চিকেই, জুনতা ও থাও। প্রাগৈতিহাসিক পদচিহ্নগুলোর বিষয়ে এ তিনজনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রাচীন মানুষ ও বিবর্তন সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য দিতে শুরু করেছে বিজ্ঞানীদের।
অ্যাস্টন বলেন, ‘তাদের নতুন ব্যাখ্যা বিস্তৃতভাবে তথ্য খুঁজে বের করতে সহায়ক। আগের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলের ক্ষেত্রেও ভরসাজনক। পার্থক্য হলেও তা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হতে পারে’।
‘আগের বৈজ্ঞানিক গবেষণার চেয়ে পদচিহ্নের ব্যাখ্যা আরো ব্যক্তিদের শনাক্ত করায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ১৫ হাজার বছর আগের মানুষের এ গ্রুপের আকার ও গঠন এবং অবশ্যই দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে জানা যাচ্ছে’।
আধুনিক পেশাদার ট্র্যাকার এবং তাদের ব্যাখ্যা সাতিশয় নির্ভরযোগ্য হয় বলেও জানান অ্যাস্টন।
১৯৯০ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের গবেষণার ক্ষেত্রেও জু / ‘হোয়ানসি সান ট্র্যাকারদের ব্যাখ্যা বৈজ্ঞানিক মেধায় পরীক্ষিত ও ৯৮ শতাংশ সঠিক ছিল বলে প্রমাণিত হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাইবার ট্র্যাকার সংরক্ষণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক লুই লাইবেনবার্গ মনে করেন, মূলধারার বিজ্ঞানের মানকে সঠিক সময়ে পেশাদার ট্র্যাকারদের সহায়তা থেকে জাগ্রত করা যেতে পারে। আফ্রিকার সবচেয়ে পেশাদারি এ আদিবাসীরা জাতীয় উদ্যানের পর্যটকদের গাইড ও ক্ষেত্রবিশেষে সংরক্ষক হিসেবেও কাজ করেন।
‘যোগ্যতাসম্পন্ন ট্র্যাকাররা বিজ্ঞানীদেরকে প্রাণীদের গণনা ও আচার-আচরণের ওপর গবেষণায় সহায়ক। তাদের তথ্য-ব্যাখ্যা পরীক্ষামূলক বৈজ্ঞানিক অনুমানের গোড়াপত্তন করে। গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে আমরা বৈজ্ঞানিক কাগজপত্রে সহ-গবেষক হিসেবে তাদের নাম দিতেই পারি’- বলেন লাইবেনবার্গ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
এএসআর