ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

আমাদের আদি পূর্বপুরুষ প্রাগৈতিহাসিক ‘টং শিশু’

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
আমাদের আদি পূর্বপুরুষ প্রাগৈতিহাসিক ‘টং শিশু’ ছবি: সংগৃহীত

২৮ লাখ বছর আগে বাস করতো শিশুটি। ১৯২৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার টং এলাকায় জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হওয়ায় নাম তার ‘টং শিশু’। আদতে সে আমাদের পূর্বপুরুষ হোমো অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্ মানবের অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানাস্ প্রজাতির সদস্য ছিল।

২৮ লাখ বছর আগে বাস করতো শিশুটি। ১৯২৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার টং এলাকায় জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হওয়ায় নাম তার ‘টং শিশু’।

আদতে সে আমাদের পূর্বপুরুষ হোমো অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্ মানবের অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানাস্ প্রজাতির সদস্য ছিল।

আমাদের নিজের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সরা বিবর্তিত হয়েছে এই হোমো অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্ প্রজাতি থেকে। ৩৬ লাখ ৬০ হাজার বছর আগে এ হোমিনিডিন প্রজাতির উদ্ভব এবং আমাদের সরাসরি পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাস্‌ তাদের পরবর্তী ধাপ।

প্রথমবারের মতো দুই পায়ে হাঁটতে শুরু করা  প্রাগৈতিহাসিক মানব অস্ট্রালোপিথেকাস্‌দের অসংখ্য জীবাশ্ম পাওয়া গেছে এবং যাচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশজুড়ে। যার মধ্যে ১৯৭৪ সালে ইথিওপিয়ায় আবিষ্কৃত ৩২ লাখ বছর বয়সী লুসি’র জীবাশ্ম এ প্রজাতি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়। লুসিতে পাওয়া জ্ঞানের ভিত্তিতে এর পরের দশ বছর অস্ট্রালোপিথেকাস্‌দেরকেই আমাদের সরাসরি পূর্বপুরুষ হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হতো। ১৯৮৪ সালে হোমো ইরেকটাস্‌ বা ইরেক্ট প্রজাতির হোমিনিনি শিশু ‘তুরকানা বয়’ বা ‘নারিওকোটমি বয়’ এর পূর্ণাঙ্গ অববয়ব আবিষ্কার প্রমাণ করে, অস্ট্রালোপিথেকাস্‌ থেকে স্যাপিয়েন্সে পরিণত হতে মাঝের ধাপ আদি আধুনিক ইরেক্ট পার হয়েছে আধুনিক মানুষেরা।  সংগৃহীত

আর টং শিশুর কঙ্কাল খুঁজে পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো মানুষের এ আদিপুরুষ সম্পর্কে জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। গবেষক দলের নেতা শারীরবিদ ও নৃ-বিজ্ঞানী রাইমন্ড ডারট সুদৃঢ় চুনা-বালিতে কঙ্কালটি খুঁজে পাওয়ার পর নতুন এ প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম দেন অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস্।

ডারট বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিলাম, আমার হাতের জীবাশ্মটি খুব সামান্য কোনো নৃ-বিজ্ঞানীয় মস্তিষ্ক নয়, সেটি ছিল মাথার অনুলিপি। মাথাটি ছিল বেবুনের চেয়েও ৩ গুণ বড় এবং একটি পূর্ণাঙ্গ শিম্পাঞ্জির চেয়েও বড়। আবার টং দাঁত ছিল একটি বানর প্রজাতির প্রাণীর তুলনায় অনেকাংশে একটি ছোট শিশুর মতো’।

গবেষণা করে আরও জানা যায়, শিশুটি আধুনিক মানুষের মতোই সোজা হয়ে হাঁটতো। এর কারণ হিসেবে ডারট বলেন, ‘শিশুটির খুলিতে এর মেরুদণ্ডের হাড় মস্তিষ্কের সঙ্গে ঠিক যেখানটাই মিলিত হয়েছে, তা যেন আমাদেরই মতো। মানুষের উৎপত্তি যে আফ্রিকায় হয়েছিল, তার প্রথম নিদর্শন ছিল টং শিশুটি’।

তবে সে সময়কার প্রসিদ্ধ শারীরবিদ স্যার আর্থার কেইথ মনে করতেন, টং শিশুটি শুধুই একটি বানর প্রজাতির নিদর্শন বলে অভিহিত করেন। এছাড়া ওই শিশুটির আর কোনো তাৎপর্যই নেই বলেও মনে করতেন তিনি।

কিন্তু পরবর্তী ২৫ বছর ধরে আরো গবেষণা চলার পর খুঁজে পাওয়া নিদর্শনগুলোর সাপেক্ষে এটিই প্রমাণিত হলো যে, ডারটই সঠিক। অর্থাৎ, প্রাগৈতিহাসিক টং শিশুর প্রজাতি অস্ট্রালোপিথেকাস্‌রাই আমাদের আদি পূর্বপুরুষ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।