ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

কম ঘুমাতে মানুষে বিবর্তন!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬
কম ঘুমাতে মানুষে বিবর্তন! ছবি: সংগৃহীত

অধিকাংশের মতে, আমাদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু একটি প্রজাতি হিসেবে আমরা আসলে আমাদের উল্লুক ও বানর আত্মীয়দের চেয়ে কম ঘুমাতেই বিবর্তিত হয়েছি।

অধিকাংশের মতে, আমাদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু একটি প্রজাতি হিসেবে আমরা আসলে আমাদের উল্লুক ও বানর আত্মীয়দের চেয়ে কম ঘুমাতেই বিবর্তিত হয়েছি।

আর কম ঘুমানোই আমাদের সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে।

অত্যধিক ঘুম আমাদের অস্থির করে রাখে এবং কাউকে চিনতে অসুবিধা হয়। খুব সামান্য ঘুমেও আমাদের মেজাজ খারাপ থাকে ও মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে।

দু’টিই ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বহন করে এবং আরো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

আমরা অধিকাংশই রাতে ছয় থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকি। যার অর্থ, আমরা আমাদের জীবনের এক তৃতীয়াংশই ঘুমিয়ে কাটাই। এটি একটি দীর্ঘ সময় মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে আমরা বানর, উল্লুকসহ স্তন্যপায়ীদের চেয়ে কমই ঘুমাই, যেটুকু আমাদের প্রয়োজন রয়েছে। আবার আমাদের ঘুম অন্য স্তন্যপায়ীদের চেয়ে উচ্চমানের। ছবি: সংগৃহীত
তাই একটি নতুন গবেষণা বলছে, ঘুম আমাদের বিবর্তনের ওপর প্রভাব ফেলেছে। মানুষ কম, কিন্তু খুব গভীরভাবে ঘুমাতে বিবর্তিত হয়েছে। এই একটি বিষয়ই প্রজাতি হিসেবে আমাদের সাফল্যের ব্যাখ্যায় সাহায্য করতে পারে। স্তন্যপায়ী গ্রুপের মধ্যে আমাদের মানই বিবর্তনের মাধ্যমে বেড়েছে। ভালো অস্ত্রসম্ভার সংগ্রহ এবং যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতেও তা ভূমিকা রেখেছে।


৩০ লাখ বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষ বানর জাতীয় অস্ট্রালোপিথ্যানসিনেস আধুনিক শিম্পাঞ্জির মতোই গাছে ঘুমাতো। অনেক বনমানুষ এখনও গাছে বাসা বেঁধে ঘুমায়।
 

কিন্তু ২০ লাখ বছর আগে বিভিন্ন মানব প্রজাতির হোমিনিনরা সম্পূর্ণরূপে ঋজুকায় হয়ে উঠেছে। মাটিতে জীবন অতিবাহিত এবং সেখানে শয্যা করতে হোমো ইরেক্টাসরাই প্রথম হোমিনিন। তার মানে, আমরা একটি দীর্ঘ সময় ধরে মাটিতে ঘুমিয়ে আসছি। ছবি: সংগৃহীত

মাটিতে ঘুমানোর অভ্যাসই একটি উচ্চমানের ও আরো শান্ত ঘুম দিয়ে হোমো ইরেক্টাসদের প্রতিভাবান করেছে। একই সময়ে হোমিনিনরা গাছ থেকে নেমে এসে বুদ্ধিমান হয়ে ওঠে এবং ভালো অস্ত্রও অর্জন করে।

এর একটি কারণ হল, তাদের গাছ থেকে পড়ে যাওয়া সম্পর্কে চিন্তা করতে হয়নি। আবার শিকারিদের হামলার ঝুঁকি মাটিতে বেশি থাকলেও তারা নিজেদের রক্ষা করার উপায় হিসেবে অস্ত্র তৈরি করে ফেলে।

বিশেষ করে, ইরেক্টাসরা আগুনের ব্যবহার আয়ত্ত করে এবং ধোঁয়া মশা ও শিকারিদের হাত থেকে তাদের নিরাপদ রাখে। তারা গুহার মতো আশ্রয়স্থলে লুকিয়েও থাকতে পারে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রিচার্ড রানঘাম বলেন যে, আমাদের পূর্বপুরুষরা খাবারে যথেষ্ট ক্যালোরি পেতো, যা তাদের বড় মস্তিস্ক গঠন ও বিকশিত করতে সহায়তা করে।


রানঘামের যুক্তি, পর্যাপ্ত ক্যালোরি আমাদের শক্তি। ক্ষুধার্ত মস্তিস্কও আমাদের বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের পূর্বপুরুষ যদি রান্না না করতো, তবে চর্বণ ও পরিপাকে তাদেরকে খুব বেশি সময় ব্যয় করতে হতো। সে রকমই কম ঘুম আমাদের কাজের সময়কে বাড়িয়ে পৃথিবীর সব প্রাণীদের নেতৃত্ব দিতে সহায়ক হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬

এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।