ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

হারিয়ে ও হেরে গেছে ঘুমকাতুরেরা!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬
হারিয়ে ও হেরে গেছে ঘুমকাতুরেরা! ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ঘুম বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডারমার বলেন, ‘মানুষের ঘুম আমাদের সবচেয়ে নিকট আত্মীয়ের (বানর, উল্লুক, বনমানুষ, শিম্পাঞ্জি) তুলনায় অদ্ভুত ও কম। এর মানে দাঁড়ায় যে, আমরা কম ঘুমের প্রয়োজনে বিবর্তিত হয়েছি’।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির ঘুম বিশেষজ্ঞ জেফ্রি ডারমার বলেন, ‘মানুষের ঘুম আমাদের সবচেয়ে নিকট আত্মীয়ের (বানর, উল্লুক, বনমানুষ, শিম্পাঞ্জি) তুলনায় অদ্ভুত ও কম। এর মানে দাঁড়ায় যে, আমরা কম ঘুমের প্রয়োজনে বিবর্তিত হয়েছি’।

‘একথাও ঠিক যে, আমাদের ঘুমকাতুরে পূর্বপুরুষেরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অন্যান্য জীবন্ত প্রাণীর তুলনায় সেরা হয়েছি আমরা’।

প্রথম বুদ্ধিমান মানব প্রজাতি হোমো ইরেক্টাস গাছ থেকে মাটতে নেমে এসেছে, পূর্বপুরুষদের গাছে ঘুমানোর অভ্যাস ছেড়ে মাটিতেই শয্যা পেতেছে। অ্যাকুইলয়ানের মতো ভালো অস্ত্র নির্মাণের মাধ্যমে নিজেদের নিরাপত্তা, শিকার কৌশল ও খাদ্যাভ্যাসকে পরিবর্তন করেছে। পুরনো পাথরের হাতিয়ারের চেয়ে তাদের প্রযুক্তিও বেশি উন্নত ছিল।

কম ঘুমিয়ে সময় সাশ্রয়ের মাধ্যমে এসব জ্ঞান ব্যাপকভাবে অর্জন করেছে মানব প্রজাতি। তাই তারা এটি আবশ্যিকভাবেই দ্রুত শিখেছে।

ডারমার বলেন, ‘আমাদের সময় যেন বেশি ঘুমিয়ে নষ্ট না হয়, সেজন্য আমাদের বড় বড় মস্তিস্ক পেতে বিবর্তনে লাখ লাখ বছর লেগেছে। তাই এটি সত্য যে, আমরা নিজেদেরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিয়ে জীবনকাল জুড়ে প্রতিদান পেয়ে থাকি’।
ছবি: সংগৃহীতউত্তর ক্যারোলিনার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড স্যামসন ও চার্লস নানের মতে, ‘এসব পরিবর্তন আমাদের পূর্বপুরুষদের আরো উন্নতমানের অস্ত্র যোগানো ও নতুন নতুন শিকার কৌশল নির্ধারণ এবং টিকে থাকার পথ দেখিয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের একটি বিবর্তনের সংযোগ ঘটিয়েছে’।

তারা বিবর্তনমূলক নৃ-বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় যুক্তি দেখান যে, ‘আমরা অন্য স্তন্যপায়ীদের চেয়ে বা প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমালেও আমাদের ঘুম উচ্চমানের হয়। গাছ থেকে মাটিতে নেমে আসা আমাদের পূর্বপুরুষদের আরও গভীরভাবে (REM) ঘুমানোর সুযোগ করে দেয়, যা পালাক্রমে তাদের চেতনাকে প্রভাবিত করে’।

‘মানুষের ঘুম তাই অদ্বিতীয়। যখন আমরা স্বপ্ন দেখি, তখনও আমাদের মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি দৃঢ় হয়’।
ছবি: সংগৃহীত
এর আগে বৃক্ষজীবী বনমানুষ, শিম্পাঞ্জি, ধূসর ইঁদুর, লেমুর, উল্লুক ও বানরেরা রাতে ১৫ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমাতো। এখনও অনেকে গাছে ঘুমায়, যা তাদেরকে নিচে ফেলে দেওয়ার  বিরাট ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। ডলফিনও সম্পূর্ণভাবে চোখ বন্ধ না করে দীর্ঘ ঘুম দেয়। এর সবাই শিকারিদের হাতেও তাদের জীবনকে বিপন্ন করে।

পক্ষান্তরে, মানুষ গড়ে প্রতি রাতে ৬.৪ ঘণ্টা বা অন্য স্তন্যপায়ীদের তুলনায় ৫ থেকে ১০ শতাংশ এবং ঘুমকাতুরে প্রাণীদের চেয়ে অন্তত ২৫ শতাংশ কম ঘুমিয়ে সময়টিকে পুরো পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণে নিতে কাজ করেছে। তাই ঘুমকাতুরেরা শুধু হারিয়েই যায়নি, মানব প্রজাতির কাছে হেরেও গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।