একটি ভিন্ন জাতি বা প্রজাতির সঙ্গে আরেকটির মিলনে বংশবৃদ্ধি বা নতুন প্রজাতি সৃষ্টির ঘটনাই শঙ্করীকরণ।
শঙ্করীকরণে নতুন জন্মদান প্রকৃতির একটি সাধারণ ঘটনা।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রেবেকা অ্যাকারম্যান বলেন, ‘স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ৭ থেকে ১০ শতাংশই হাইব্রিড। এতে মেধাবী ও উন্নতমানের উত্তরাধিকার বা নতুন প্রজাতি পেয়ে লাভবান হয় সব ধরনের জীবেরাই’।
গত বছরের জুলাই মাসে জন্ম নেওয়া একটি শংকর প্রবাল তার বাবা-মা বা প্রজাতির তুলনায় অনেক এগিয়ে গেছে। এটি একটা ব্যস্ত শিপিং চ্যানেলেও বেঁচে থাকতে পারে, যা তার বাবা-মা পারে না।
বাদামি ভালুক ও মেরু ভালুক ইন্টারব্রিডেড হয়, যখন থেকে তারা কাছাকাছি আসে। বিখ্যাত গালাপাগোস ফিঙ্গেদের অধিকাংশই শঙ্কর প্রজননের ফসল। বেবুন ও উল্লুকের মতো আরো অনেক স্তন্যপায়ী ছাড়াও নেকড়েদের সঙ্গে কুকুরের সফল ইন্টারব্রিডের ঘটনা রয়েছে অনেক।
মানুষের ক্ষেত্রে এর প্রথম আবিষ্কার রোমানিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পেস্তেরা কিউ ওয়েসে গুহায় পাওয়া ওয়েসে ২ নামক ৪০ হাজার বছর আগের এক প্রজাতির মানুষের জীবাশ্ম। ওয়েসেরা জন্ম নেয় স্যাপিয়েন্স ও নিয়ান্ডারথালের মিলনে। র ফসল। ওয়েসেদের ডিএনএ’র ৬ থেকে ৯ শতাংশ ছিল নিয়ান্ডারথালদের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া।
বোস্টনের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ডেভিড রাইখের বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা নিয়ান্ডারথাল ও আধুনিক মানুষের মধ্যে শঙ্কর প্রজননের ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করছি। নতুন প্রজাতির নতুন বৈশিষ্ট্যগুলো দরকারী, যা তারা ভবিষ্যতে সামনে এগোনোর জন্য সহায়ক’।
রেবেকা অ্যাকারম্যান শংকর ইঁদুর খুঁজে পেয়ে গবেষণা করে জানান, তাদের দাঁতের ব্যতিক্রম বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়া তাদের আকারের প্রকরণও উন্নততর ছিল।
রেবেকা অ্যাকারম্যান ও তার সহকর্মীরা শঙ্করীকরণের পক্ষে যুক্তি দেন যে, ‘এ ধরনের বিবর্তন প্রক্রিয়ায় নতুন জনগোষ্ঠী বৈচিত্র্যপূর্ণ কাজ করতে সক্ষম হয়। শঙ্করীকরণ নতুন বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ও ঘটাতে পারে। এটি বেশ একটি সৃজনশীল বিবর্তনীয় শক্তি হতে পারে, যা মানুষেরও অতীতের চিন্তা ছেড়ে নতুন কিছু ব্র্যান্ডের সৃষ্টি করে’।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
এএসআর