শঙ্কর প্রজনন ঘটিয়ে যে পরিবর্তনগুলো আমরা অর্জন করেছিলাম, সেগুলো আমাদের জীবনের গতি বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
গত পাঁচ বছর ধরে আমাদের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স এবং আমাদের প্রথম পূর্বপুরুষদের মধ্যে পৃথক এ শঙ্কর প্রজননের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিবর্তনীয় জেনেটিক বিশেষজ্ঞ রাসমান নিলসেন বলেন, ‘যখন আধুনিক মানুষেরা আফ্রিকা ত্যাগ করে, তখন অন্য প্রজাতিতে একীভূত হয়। সুতরাং আমাদেরকে নতুন পরিবেশে দ্রুত ও অনেক বেশি মানিয়ে নিতে সহায়তা করে’।
গবেষকরা আরও বলছেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জ্ঞান, নতুন অভ্যাস এবং আচরণের পাশাপাশি জিনও ভাগাভাগি করেছে। অন্যান্য প্রজাতিও আমাদের উন্নয়নের উদ্দীপনায় সাহায্য করেছে।
আমাদের কিছু সৃজনশীলতাও বিভিন্ন দলের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ায় অর্জিত।
আবার, ডিএনএ’র প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা নিয়ান্ডারথালদের থেকে নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। আমরা যখন আফ্রিকা থেকে প্রথম ইউরোপে আসি, আমাদের অনাক্রম্য অপরিচিত স্থানীয় রোগের মোকাবেলায় করতে লড়াই বরতে হয়। কিন্তু যখনই নিয়ান্ডারথালের সঙ্গে ইন্টারব্রিডে বংশধর জন্ম নিলো, তখন তা প্রতিরোধে সক্ষম হলাম আমরা।
একই ঘটনা ঘটেছে যখন ইউরোপীয়রা আমেরিকায় অভিবাসন শুরু করে। যেসব রোগ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বিপর্যয়কর ছিল, ইউরোপীয় ও উত্তর আমেরিকানদের মধ্যে প্রজননের পর সেগুলো প্রতিরোধের ক্ষমতার সৃষ্টি হলো উভয়েরই শরীরে।
নিলসেন বলেন, ‘নিয়ান্ডারথাল ও আধুনিক মানুষের মধ্যে একাধিক শঙ্করীকরণই আমাদের বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে’।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রেবেকা অ্যাকারম্যান যুক্তি দেন যে, ‘আমরা এই প্রাচীন মানুষদের সঙ্গে মিলে সাংস্কৃতিক সাফল্যও পেয়েছি। সাংস্কৃতিক এ মিথস্ক্রিয়া এবং প্রতিষ্ঠান ও অন্য প্রজাতির সঙ্গে মিশ্রণই আমাদের সুসংহত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে, তা আসলে শঙ্করায়নেরই ফল’।
‘অনেক মানব প্রজাতি বিবর্তিত হলেও আজ আমরা হোমো স্যাপিয়েন্সরাই কেবল টিকে আছি। আমাদের জটিল সংস্কৃতিই পরিষ্কারভাবে অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আমাদের ক্ষমতাকে সুসংহত করেছে’।
অ্যাকারম্যান বলেন, ‘আমরা শঙ্করায়নে পরিষ্কারভাবে নতুনত্ব ও নেতৃত্ব অর্জন ছাড়াও ভালোভাবে বিবর্তিত হতে পেরেছি’।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিমোন ব্রুকস বলেন, যে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে আমাদের প্রজাতি সেরা মানুষে পরিণত হয়েছে, শঙ্করীকরণ সেগুলো অর্জনের প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
এএসআর