ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

প্রসবকে কঠিন করেছে কৃষিকাজও! 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
প্রসবকে কঠিন করেছে কৃষিকাজও!  ছবি: সংগৃহীত

বিবর্তনের ইতিহাসে কোটি কোটি বছর ধরে মানুষের বেশিরভাগ প্রজাতির প্রসব অনেক সহজ ছিল। তবে আমাদের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্সদের গর্ভধারণের সময়কাল, প্রসব বেদনা ও মাতৃমৃত্যুর হার বেশি হয়েছে দশ হাজার বছর আগে থেকে। 

বিবর্তনের ইতিহাসে কোটি কোটি বছর ধরে মানুষের বেশিরভাগ প্রজাতির প্রসব অনেক সহজ ছিল। তবে আমাদের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্সদের গর্ভধারণের সময়কাল, প্রসব বেদনা ও মাতৃমৃত্যুর হার বেশি হয়েছে দশ হাজার বছর আগে থেকে।

 

নারীর প্রসবকে অনেক বেশি কঠিন করেছে ফসলের চাষও- গবেষণায় পাওয়া এমনই চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।  

যুক্তরাজ্যের লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের শৈশব পুষ্টি চর্চা বিশেষজ্ঞ জোনাথন ওয়েলস ও তার সহকর্মীরা জানান, প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রথম শিকারি ও সংগ্রহকারী মানুষের যেসব জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, তার মধ্যে খুব কম সংখ্যকই ছিল নবজাতকের কঙ্কাল। যা ইঙ্গিত দেয়, নবজাতকদের মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে কম ছিল।  

কয়েক হাজার বছর আগে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, যখন মানুষ চাষাবাদ শুরু করে। সে সময়কার অনেক বেশি নবজাতক শিশুর কঙ্কাল পাওয়া গেছে এবং অন্তত কিছু জায়গায় এটি একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে।

ছবি: সংগৃহীতকৃষকরা অপেক্ষাকৃত ঘন জনবসতিতে বসবাস শুরু করলে শিকারিদের তুলনায় তাদের উচ্চতা কমতে থাকে। জীবাশ্মের তুলনামূলক বিশ্লেষণ শেষে বিজ্ঞানীরা জানান, তাদের শরীর লক্ষণীয়ভাবে খাটো ছিল। কারণ, চাষের সঙ্গে সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস বেশি প্রচলিত হয়ে ওঠে। তাদের এসব কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাদ্য শিকারি ও সংগ্রহকারীদের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্যের তুলনায় পুষ্টিকর ছিল না।

এছাড়া কাজের শিফট পরিবর্তন, অর্থাৎ ভোরের চাষাবাদ একটি পর্যায়ে প্রেরণসাধ্য রোগ বৃহত্তর সমস্যা হয়ে ওঠে। ফলে প্রসবকালে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।  নবজাতকরাও প্রায়ই সংক্রমিত হতে থাকে।


অন্য বিবর্তনশীল পরিবর্তন সম্পর্কে ওয়েলস বলেন, একজন নারীর উচ্চতা ও আকারের সঙ্গে সঙ্গে তার শ্রোণীচক্র ও জন্মনালীও সংকীর্ণ হতে থাকে। কার্বোহাইড্রেট ও চিনিজাতীয় খাদ্যও একটি উন্নয়নশীল ভ্রূণকে বড় ও মোটা করতে থাকে, যা পরবর্তীতে শিশুকে গর্ভ থেকে বের করে আনা কঠিন করে তোলে।

এ বিবর্তন গর্ভাবস্থার সময়কালকেও বাড়িয়ে ক্লান্তিকর করে তুলেছে। গর্ভবতী নারীরা দিনে দিনে ভ্রূণকে বেশিদিন সংরক্ষণের ধারায় অভিযোজিত হয়েছে। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণভাবে খাবার বাড়ালে নারীদের অভিযোজিত শ্রোণীচক্রে ওই সর্বাধিক পুষ্ট ভ্রূণ নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারে। তবে গত কয়েক হাজার বছরের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এ সূক্ষ্ম ভারসাম্যকে বিপর্যস্ত ও প্রসবকে ঝুঁকিপূর্ণ করেছে। বিশেষ করে যে মায়েরা কম ও পুষ্টিহীন খাদ্য পায়, তাদের ও নবজাতকের মৃত্যুহার বেড়ে গেছে।

এসব কারণে চাষাবাদ ও বিট স্থানান্তর অবশ্যই প্রসবকে আরো চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে এবং কৃষিকাজ এখনো আমাদেরকে পরিবর্তিত করছে বলেও জানান ওয়েলস।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।