শিম্পাঞ্জি, উল্লুক বনমানুষসহ আমাদের বর্তমান ও বিলুপ্ত আত্মীয়, এমনকি নিয়ান্ডারথালসহ পূর্বপুরুষ মানব প্রজাতিগুলোরও চিবুক নেই। শুধু আমরা আধুনিক প্রজাতির মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সরাই কেন চিবুকধারী বা এটির উদ্দেশ্য আসলে কি?- নানাভাবে গবেষণা করেও এ রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারছেন না গবেষকরা।
মানুষের নিচের চোয়ালের সামনের প্রাচীরের নিচে প্রদর্শিত প্রসারক অংশটি সম্পর্কে গত শতাব্দীতে বিভিন্ন তত্ত্ব দেওয়া হলেও এখনও জটিল ধাঁধাই রয়ে গেছে বিষয়টি। নর্থ ক্যারোলাইনার ডরহম ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পাম্পুস এবং কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের জানেটা থায়ের গত কয়েক বছর ধরেই মানব চিবুক নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে তারাও একমত হতে পারেননি, কেন চিবুক বিদ্যমান।
পাম্পুসের মতে, ‘চিবুক সত্যিই অদ্ভুত হয় এবং আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে’।
থায়েরও মনে করেন, ‘আধুনিক মানব এবং সমসাময়িক বিলুপ্ত নিয়ান্ডারথালদের মস্তিষ্কের পার্থক্যের কারণে আমাদের চিবুক হয়েছে। দুই প্রজাতির মানুষের আচরণগত বা খাদ্য তালিকাগত কিছু পরিবর্তনও এটি গঠনের কারণ। চিবুকযুক্ত চেহারা তাই আধুনিক মানুষকে আকর্ষণীয় করে তোলে’।
তবে স্প্যান্ড্রেল হাইপোথিসিস নামে পরিচিত এ তত্ত্ব প্রমাণ করতে পারেননি তারাও। যদিও চিবুক প্রশংসনীয় ও অদ্ভুত হয় কিন্তু গবেষকরা এর বিবর্তনীয় প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদেরকে ধারণা দিতে পারেননি। এমনকি এটি আরো ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সুন্দর করে তুলতে আমাদের খুব সামান্যই সাহায্য করে। এছাড়া বিবর্তন প্রভাবিত প্রক্রিয়া আরও অনেক উপায়ে কাজ করে।
এটি আশ্চর্যজনক যে, চিবুক মানুষের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, যা একইসঙ্গে বিরলও। অনেক বৈশিষ্ট্যই মানুষের আছে, যা অন্য পশুদের নেই। সেগুলো আমাদেরকে পৃথিবীর নেতৃত্বে বসাতে সহায়তা করতেই বিবর্তনের ফল। কিন্তু চিবুক আক্ষরিক অর্থেই পশুদের না থাকলেও শরীরের অপ্রয়োজনীয় অংশটি আমাদের সে উপকার করেছে কি-না, সেটি বুঝতে সাহায্য করতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
এএসআর