নারীর দাঁত পুরুষের তুলনায় বেশি কাজ করে লৈঙ্গিক সমতা আনে সেসময়। এমনকি মানব প্রজাতিগুলোর মতো প্রথমবারের মতো অসুস্থ, বয়স্ক, প্রতিবন্ধীদের সেবা ও দেখভাল করারও প্রমাণ রয়েছে দাঁতে, যেটি আমাদের হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতির মধ্যেও সঞ্চালিত হয়েছে।
স্পেনের বার্সেলোনার ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক কারেন হার্ডি তাদের দাঁত নিয়ে গবেষণা শেষে জানান, দাঁত সুস্থ-সুন্দর ও নিরোগ রাখতে কিছু নিজস্ব উদ্ভাবিত পদ্ধতি-চিকিৎসা জানতো নিয়ান্ডারথালরা। তাদের দাঁতে লেগে থাকা কঠিনীভূত খাদ্য ও প্লেকের অবশিষ্টাংশ এ সাক্ষ্য দিচ্ছে।
হার্ডি বলেন, তারা দাঁতকে একটি ‘তৃতীয় হাত’ হিসেবে সামনে রাখা খাবার গ্রহণের কাজে ব্যবহার করতো। বেশি খাবার সংগ্রহ ও খেতে এটি বেশ কাজে লাগতো।
বিজ্ঞানীদের মতে, নিয়ান্ডারথালরা দাঁত পরিষ্কার রাখা ও ক্ষয় মোকাবেলায় মোচাকৃতি রজন বা পারে কাঠের টুথপিক ব্যবহার করতো। দাঁত মাজা বা ঘষায় ব্যবহৃত এ কাঠ ওষুধি, যাতে ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্য আছে বলেও জানা যায়।
মানব বিবর্তন জার্নালে প্রকাশিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উইভার ডেভিসের গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, আধুনিক মানুষের আসলে খারাপ দাঁত ছিল এবং নিয়ান্ডারথালদের দাঁতে ছিল কম গহ্বর।
উইভার বলেন, আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, নিয়ান্ডারথালদের দাঁতের ক্ষয় আধুনিক মানুষের তুলনায় কম ছিল। যা থেকে প্রমাণিত হয়, নিয়ান্ডারথালরা আমাদের চেয়ে চিরায়ু ছিল।
দাঁত শরীরের খাদ্য পরিপাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দাঁত হারালে এ প্রক্রিয়া চলতে পারে না। তাই নিয়ান্ডারথালদের দাঁত অন্যদের তুলনায় খাদ্য পরিপাকে বেশি উপযোগী ছিল।
এদিকে দাঁত ছাড়া নিয়ান্ডারথালদের জীবাশ্ম পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটি প্রমাণ করে যে, এ ধরনের প্রতিবন্ধী বা দন্তহীন নিয়ান্ডারথালদের অন্যরা যত্ন ও সমবেদনা দেখাতো।
কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের বেনস্ ভায়োলা বলেন, মৃত্যুর আগে দাঁত হারানোদের প্রতি নিয়ান্ডারথালরা দয়াশীল ছিল। তারা তাদের অসুস্থ ও বৃদ্ধ সদস্যদেরও পরিচর্যা করতো।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৭
এএসআর/এএ