ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

বড় চোখেই ধ্বংস!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৭
বড় চোখেই ধ্বংস! ছবি: সংগৃহীত

আমাদের বিলুপ্ত সহোদর ও সমসাময়িক মানব প্রজাতি নিয়ান্ডারথালদের চোখ আমাদের তুলনায় অনেক বড় ছিল। দৈত্যাকৃতির এ চোখই তাদের ‘ধ্বংসের গোপন কারণ’ ছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

আদি মানবদের যে দল ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের নানা অঞ্চলে স্থায়ী হয়েছিল তারা কালক্রমে বিবর্তিত হয়ে হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেনসিস বা নিয়ান্ডারথাল প্রজাতিতে পরিণত হয়। আমাদের আধুনিক প্রজাতির মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সরা ৭০ হাজার বছর আগে ইউরেশিয়ায় অভিযোজিত হয়ে তাদের সাক্ষাৎ পায়।

আড়াই লাখ বছর আগে জন্ম নেওয়া ইউরেশিয়ার নিয়ান্ডারথালরা বরফযুগের শীতল জলবায়ুতে খুব ভালোভাবে অভিযোজিত হতে পেরেছিল। স্যাপিয়েন্সের তুলনায় বড় মস্তিস্ক, বিশাল শরীর ও অধিক পেশিবহুল হওয়া সত্ত্বেও আমাদের কাছে হেরে ৩০ হাজার বছর আগে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যায় নিয়ানডারথালরা।  

নানাভাবে তারা ছিল আমাদের মতোই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এতোটাই মিল ছিল যে, বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, আমাদের প্রজাতি আসলে তাদের সঙ্গে ইন্টারব্রিডে সৃষ্টি।

তা সত্ত্বেও কিছু পার্থক্য তাদেরকে বিলুপ্ত করেছে আর আমাদেরকে নেতৃত্বে বসিয়েছে। যার মধ্যে একটি তত্ত্ব অনুসারে, নিয়ান্ডারথালদের ‘বড় চোখ’ তাদের ধংসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

   
ছবি: সংগৃহীত২০১৩ সালে ইলুনেড পিয়ার্সের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ব্যাখ্যা দেন যে, তাদের চোখের দোষ ছিল।

আধুনিক মানুষ ও নিয়ান্ডারথালের খুলির বিস্তারিত বিশ্লেষণ থেকে পিয়ার্স মত দেন যে, ‘তাদের চোখ ও তাদের মস্তিষ্কের চাক্ষুষ প্রক্রিয়া আমাদের চেয়ে বড় ছিল। তাদের বড় বড় চোখ মস্তিষ্কের একটি বড় অংশের অনুগত হওয়ায় অন্য অংশ ছোট হয়’।

‘যেহেতু নিয়ান্ডারথালদের উচ্চতর অক্ষাংশে প্রসূত এবং আধুনিক মানুষের চেয়ে বড় দেহ ছিল, সেহেতু মস্তিষ্ককে দৃষ্টি ও শরীরের নিয়ন্ত্রণ করতে নিবেদিত হতে হয়েছে বেশি। ফলে সামাজিক নেটওয়ার্কিংয়ের মতো অন্যান্য কাজ সম্পাদন ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করা মস্তিষ্কের পক্ষে সম্ভব হয়নি’।

তত্ত্বটি বলছে যে, ‘আমাদের চেয়ে এ ভিন্নতার কারণে তারা জটিল সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য তাদের মস্তিষ্কের বৃহৎ অংশকে উৎসর্গ করতে পারেনি। তাই যখন তারা জলবায়ু পরিবর্তন বা আধুনিক মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হুমকি ও সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাদের জন্য বড় চোখই মূল অসুবিধার কারণ হয়ে দাড়ায়।

দলবদ্ধভাবে সম্পাদিত কর্ম এ পরিস্থিতিতে অত্যাবশ্যক ছিল। অথচ তারা বড় দল গঠনের সক্ষমতা অর্জন করেনি। ফলে প্রায় আলাদা আলাদা ভাবে  আমাদের ও প্রকৃতির সঙ্গে অসম যুদ্ধে অনিবার্যভাবেই পরাজিত হয় নিয়ান্ডারথালরা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৭
এএসআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।