ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

‘ওমোটেনাসি’ সংস্কৃতিতে বিশ্বের সবচেয়ে ভদ্র দেশ

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
‘ওমোটেনাসি’ সংস্কৃতিতে বিশ্বের সবচেয়ে ভদ্র দেশ বিশ্বের সবচেয়ে ভদ্র দেশ, ছবি: সংগৃহীত

হিরোশিমার কাছে জাপানের নিনোসিমা দ্বীপ বিখ্যাত জাপানি আতিথেয়তা ও সেবার জন্য। ওমোটেনাসি নামে পরিচিত প্রণিপাত ও নম্রতার এ আচরণ সম্প্রীতি বজায় রাখা ও সংঘাতের পথ পরিহারের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সূক্ষ্ম ভদ্রতার সম্মিলন।

‘ওমোটেনাসি’ জাপানকে বিশ্বের সবচেয়ে ভদ্র দেশ বলে পরিচিত করেছে।

এখানকার মানুষ কাশি দেওয়ার পর অন্যদের সংক্রমণ এড়াতে অস্ত্রোপচারের মুখোশ পরেন।

নির্মাণ কাজ শুরুর আগেই বাতাসে উড়বে- এমন ধুলো থেকে জামা-কাপড় পরিষ্কারে সহায়তা করতে প্রতিবেশীদের ওয়াশিং পাউডারের বাক্স উপহার দেন।

ভদ্র-সভ্য জাপানিদের চমৎকার আচরণের উপায় ও প্রাণশক্তির উৎস ওমোটেনাসি জাপানি সংস্কৃতির অনিবার্য অংশ। জাপানের মানুষ একটি প্রাচীন প্রবাদ থেকে এ ভদ্রতা শিখেছেন।

ওমোটেনাসি জাপানের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি স্তরকে প্রভাবিত করে, যে ভদ্রতায় শৈশব থেকেই অভ্যস্ত হন জাপানিরা।

দোকান ও রেস্তোরাঁর কর্মীরা অতিথিদের নত হয়ে বলিষ্ঠ আচরণের মাধ্যমে ‘ইরাসহাইমেস’ (স্বাগত) এর সঙ্গে শুভেচ্ছা জানান। তারা যখন খুচরো ফেরত দেন, তখন এক হাত ক্রেতাদের হাতের নিচে রাখেন, যেন মুদ্রা নিচে পড়ে না যায়। যখন ক্রেতারা দোকান ছেড়ে চলে যান, তখন ওই কর্মীরা দৃষ্টিশক্তির বাইরে যাওয়া পর্যন্ত মূল দরজার সামনে নত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।

হিরোশিমার ওনোমিসি ভিত্তিক জাপানের অভ্যন্তরীণ পর্যটন সংস্থা ‘ডিসকোভারলিঙ্ক সেটোওসি’র প্রধান নোরিকো কোবাইয়াশি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেকেই একটি প্রবাদে অভ্যস্ত হয়ে বড় হয়েছি’।  

প্রবাদটি হচ্ছে, ‘কেউ আমাদের জন্য ভালো কিছু কাজ করেছে। আমাদের অন্য ব্যক্তির জন্য সুন্দর কিছু করতে হবে। কিন্তু পরে কেউ কিছু খারাপ কাজ করলেও আমাদের অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য খারাপ কিছু করা উচিত নয়’।

‘আমার মনে হয়, এ বিশ্বাস আমাদের আচরণকে ভদ্র করেছে’- বলেন কোবাইয়াশি।

এসব ভদ্রতা কোথা থেকে এসেছে? ওসাকা জাতীয় জাদুঘরের জাতিতত্ত্ব রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এমেরিটাস অধ্যাপক আইসাও কুমাকুরার মতে, জাপানের অনেক শিষ্টাচার চা-অনুষ্ঠান, মার্শাল আর্ট এবং আনুষ্ঠানিক ধর্মানুষ্ঠানে মধ্যে সম্ভূত। ওমোটেনাসি শব্দটির আক্ষরিক অর্থই হচ্ছে ‘সেবা চেতনা’।

চা-অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণকারী আতিথেয়তার প্রস্তুতিতে কঠোর পরিশ্রম করে সবচেয়ে সুন্দর বাটি, ফুল ও প্রসাধন নির্বাচন করেন। অতিথিরাও আমন্ত্রণকারীর প্রচেষ্টাকে সচেতন ও সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা দেখিয়ে সাড়া দেন। উভয়পক্ষের এ সম্প্রীতি ও শ্রদ্ধার পরিবেশ ও বিশ্বাস কোনো কিছুর আশা ছাড়াই গড়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৭
এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।