বিজ্ঞানীরা জানান, ৬৫০ মিলিয়ন বছর আগে প্রথম প্রাণীদের উদ্ভব ঘটে আর বর্তমানে ৭.৭ মিলিয়ন প্রজাতির প্রাণীরা বেঁচে আছে। এদের মধ্যে হাতি, তিমি হাঙ্গর, মেরু ভালুক, টাইরানোসারস ও টাইটানোসারসরা বৃহৎ প্রাণীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
২০১১ সালে একদল বিজ্ঞানী আকার ও জীবাশ্মের বয়সের ভিত্তিতে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বিবর্তনের সর্বোচ্চ হার নির্ধারণে কম্পিউটেশন পদ্ধতিতে গবেষণা করে জানান, ৩৮.৮ মিলিয়ন বছর আগে তিমির প্রথম উদ্ভব দন্ত তিমি থেকে। প্রায় পাঁচ মিলিয়ন প্রজন্ম ধরে তিমিরা তাদের শরীর বাড়াতে ৫ হাজার বার বিবর্তিত হয়েছে।
তাই প্রাগৈতিহাসিক তিমি বর্গের সদস্যরা নীল তিমির মতো আধুনিক প্রজাতির অনুরূপ ছিল না। ২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, এ আন্তবর্গের সাম্প্রতিকতম সাধারণ পূর্বপুরুষদের দৈর্ঘ্য মাত্র ৫ মিটার পর্যন্ত ছিল।
দলটির নেতা অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী অ্যালিস্টেয়ার ইভান্স বলেন, ‘দু’টি প্রধান কারণে তিমি অন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের তুলনায় দ্রুততম সময়ে বড় আকার ধারণ করতে পেরেছে। প্রথমত, জলে বাস করে বলে তাদেরকে নিজের শরীরের ওজন বহন করতে হয় না। সেখানকার অনেক পানি স্থলের তুলনায় একটি বড় শরীরের ওপর কম চাপ অনুভব করায়। পদার্থবিদ্যা এখানে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে’।
‘দ্বিতীয়ত, তিমির ওপরের চোয়ালের (টাকরা) হাড় মুখ থেকে খুঁজে খুঁজে সমুদ্রের অতি ক্ষুদ্র জীবাণু পর্যন্ত পরিশোধন করে ফেলে’।
জাপানের জাতীয় জাদুঘরের প্রকৃতি ও মেরুদণ্ডী প্রাণী বিজ্ঞানী চেং-হি সুই সাই বলেন, ‘হরমোনের অস্বাভাবিকতা জনিত অতিবৃদ্ধি রোগের (গিগানটিজম বা রাক্ষস রোগ) কারণে তিমির ওপরের চোয়ালের (টাকরা) হাড় চারবার পর্যন্ত স্বতন্ত্রভাবে বিবর্তিত ও বিকশিত হতে থাকে। নীল তিমির এ টাকরার হাড় ১২ ফুট পর্যন্ত দৈর্ঘে্যর হয়ে থাকে। এমনকি ক্ষুদ্রতম বেঁটে ডান তিমির হাড়টিও ৬ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে’।
বিভিন্ন কারণে একটি প্রাণী এ রাক্ষস রোগের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। দৈত্যাকৃতি সাধারণত শিকারিদের জন্য তাড়ানো, যৌনসঙ্গীর জন্য প্রতিযোগিতা, সম্পদ ঘাটতির সময়কালকে সহ্য করা এবং তাপ সংরক্ষণের ভালো উপায়, যা উষ্ণস্থিত জলজ প্রাণীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘এর মানে হল যে, রাক্ষস রোগ একটি অপ্রত্যাশিত সাফল্য, কিন্তু একটি প্রবণতা নয়’।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩,২০১৭
এএসআর