প্রতি বছরের মতো এ বছরও গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম উটের মেলা বসেছে পুস্করে। এবার ৩০ হাজারেরও বেশী উট বিক্রি হবে বলে আশাবাদী আয়োজকরা।
মিথ অনুযায়ী, সতীর মৃত্যুর পর শোকাতুর মহাদেবের চোখ নি:সৃত জল থেকে এই হ্রদের সৃষ্টি। মহাভারত আর রামায়ণেও তীর্থ স্থান হিসেবে উল্লেখ আছে পুস্করের নাম। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে এখানকার প্রধান আকর্ষণ বিরল ব্রহ্মা মন্দির।
প্রাচীন এই তীর্থে উপাসনালয়ের আধিক্য বিষ্ময় জাগায়। এখানে অন্তত ৪শ’ মন্দির আছে হ্রদটিকে ঘিরে। আছে মঠ আর মসজিদও। আর আছে উট সাফারি।
এ মেলায় গরু, ছাগল আর ভেড়াও বিক্রি হয় বটে, কিন্তু প্রায় অর্ধশত স্নানঘাটের হ্রদকে ঘিরে উটকে কেন্দ্র করেই মূলত জমে প্রধান আয়োজন।
এ মেলা শুরুই হয় উট দৌড়ের প্রতিযোগিতা দিয়ে। পাশাপাশি আনন্দ বাড়িয়ে দেয় মটকা ভাঙা, বড় গোঁফের প্রতিযোগিতা আর গণ বিয়ের আয়োজন।
নাগপুরের রূপার অলংকার আর আজমিরের কাপড় কেনার পাশাপাশি রাজস্থানি গান-বাজনার উপভোগ্য আসর বসে পুস্করের মেলায়। সন্ধ্যায় পুণ্যস্থানের সময় হ্রদের পাড়জুড়ে জ্বলে ওঠে হাজার হাজার প্রদীপ। বাজিতে বাজিতে আলোকিত হয় আকাশ।
ভালো করে ঝেড়ে মুছে, রংবেরঙের কাপড় আর অলংকার পরিয়ে উটগুলোকে আনা হয় মেলায়। উট সাজানো দেখেও মুগ্ধ হয় দর্শক। জমে ওঠে মানুষের পাশাপাশি উটেরও অলংকার বিকিকিনি। উটের নাকে নথ পরানো দেখতে ভিড় জমে পর্যটকদের।
উট প্যারেডের চাক্ষুস অভিজ্ঞতাও নিতে ভোলেন না পর্যটকরা। একসঙ্গে অনেক মানুষ পিঠে বসিয়ে উটের কসরত দেখানোও উপভোগ করে দর্শনার্থীরা। অবাক হয়, অনেক বস্তুর ভেতরে লুকিয়ে রাখা জিনিস যখন খুঁজে বের করে এনে মালিকের হাতে তুলে দেয় প্রভুভক্ত উট। প্রতিটি ইভেন্ট শেষে ঘাড় উঁচিয়ে দর্শকদের সম্মান জানায় উটগুলো।
ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে ভাড়া নিয়ে চড়া যায় উটের পিঠে। মেলার শেষ দিন দর্শনার্থীরা হ্রদের জলে স্নান করে কঠিন কঠিন সব রোগ থেকে মুক্তির আশায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৭
জেডএম/