ভূতপূর্ব রাজপ্রাসাদের পাশে ব্লু হাউস কম্পাউন্ডে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে আরো থাকবে উপাদেয় রসাসহ গরুর পাঁজরের মাংসের বিশেষ পদ। বাদ যাবে না ট্রাম্পের পছন্দের মাছও।
সিউল রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রীর খাবার টেবিলে পরিবেশনের জন্য সংগ্রহ করা বিশেষ সয়া সস ৩৬০ বছরের পুরনো। এর মানে হলো ১৬৫৭ সালে ওই সস তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণায় সাক্ষরকারী বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন এর পিতার জন্ম ওই বছরই হয়।
দক্ষিণ কোরীয় খাদ্য সংস্কৃতিতে উপাদেয় সয়া সস প্রধানতম উপাচার। অত্যন্ত দক্ষ কারিগররা এই সস তৈরি করে দশকের পর দশক, এমনকি শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে সংরক্ষণ করেন। এমন এক লিটার সস এর দাম দশ হাজার মার্কিন ডলার (১ ডলারে ৮১ টাকা) ছাড়িয়ে যায়।
২০১২ সালে এক খাদ্য প্রদর্শনীতে প্রায় সাড়ে চারশ’ বছরের পুরনো সয়া সস প্রদর্শন করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রায় যার দাম হাঁক হয়েছিলো ১শ’ মিলিয়ন ওয়ান।
মঙ্গলবারের নৈশভোজে ট্রাম্পের মেনুতে এমন সব খাবার পরিবেশন করা হবে যেগুলোতে মিশে থাকবে স্থানীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য।
এসবের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া সফরের আগে জাপান সফর করে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চমকে দিতে চাইছে কোরিয়া। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র সঙ্গে ডোনাল্ট ট্রাম্পের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ককে মাথায় রেখেই মূলত সাজানো হয়েছে তার খাবার মেনু।
জাপানে নেমে চিজবার্গার আর টমাটো কেচাপ গলার্ধকরণের পর রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে স্টেকের স্বাদ নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মনোযোগকে বিশেষ বিষয়ে নিমগ্ন করাতে বয়সী সস ছাড়াও জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যবর্তী বিবাদমান এক দ্বীপ থেকে ধরে আনা হয়েছে বড় বড় চিংড়ি।
জাপান সাগরে দকদো নামে পরিচিত ওই দ্বীপপুঞ্জ এখন দক্ষিণ কোরিয়ার দখলে থাকলেও মালিকানা নিয়ে বিবাদ চলে আসছে জাপানের সঙ্গে। জাপানে তাকেসহিমা নামে পরিচিত ওই দ্বীপপুঞ্জই এক দশকেরও বেশী সময় ধরে আঞ্চলিক বিরোধের কারণ হয়ে আছে উভয় দেশের মধ্যে।
কয়েকশ’ বছরের পুরনো সয়া সসের সঙ্গে বিবাদমান দ্বীপ থেকে চিংড়ি ধরে এনে ট্রাম্পের পাতে তুলে দিয়ে কার্যত কুশলী এক কূটনৈতিক চালই চালতে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৭
জেডএম/