খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে গ্রহণ করা বিশ্বের প্রথম দেশ আর্মেনিয়া। এখনকার প্রায় ৯৫ শতাংশ আর্মেনিয়ান খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী এবং দেশটির আধ্যাত্মিকতার পবিত্র ইতিহাস তার প্রাচীন স্থান ও স্মৃতিসৌধগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায়।
সূর্যদেবের প্যাগান মন্দির গর্নির দুর্গ, সেন্ট গেইনি চার্চ, খোর ভ্ররাপ ও জাঘার্ডের মঠ, ইয়েগেহেজিসের জোরাটস্ গির্জা (ভেঘাশাপাটের এচমাইডজিন ক্যাথিড্রাল থেকে যিশু খ্রিস্টকে বিদ্ধকারী ক্রুশ এনে ৫০০ বছর রাখা হয় বলে কিংবদন্তি রয়েছে), ক্রুশ-ফুলের মোটিফে খোদিত খাচকারস বা পাথরের এপিটাফ এবং প্রাগৈতিহাসিক কবরস্থান কারহুঞ্জের ভাঁজে ভাঁজে প্রকাশিত সে ইতিহাস। সেগুলোর কোনো কোনোটি ইউনেস্কো’র ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ আবার কোনো কোনোটি বিশ্বখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র।
আর্মেনিয়ার অ্যাপোস্টোলিক চার্চের প্রথম প্রধান ছিলেন গ্রেগরি দ্য ইলমিনেটর, যার বাবা রাজপুরুষ আনাগকে সে সময়কার রাজা দ্বিতীয় খুসরোভকে হত্যার দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। গ্রেগরি খ্রিস্টধর্মের সূচনাকালের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এশিয়া মাইনরের ক্যাপাডোসিয়ায় পালিয়ে গিয়ে বিশপ সেন্ট ফিরমিলানের আশ্রয়ে প্রতিপালিত হন।
বড় হয়ে গ্রেগরি আর্মেনিয় রাজাকে দীক্ষিত করে তার মাধ্যমে দেশবাসীর মাঝে খ্রিস্টধর্ম ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যাশায় স্বদেশে ফিরে আসেন। কিন্তু তখনকার রাজা ও নিহত খুসরোভ দ্বিতীয়ের ছেলে তৃতীয় তিরিডেটস্ গ্রেগরিকে কারাবন্দি করে রাখেন। রাজা তাকে খ্রিস্টধর্ম পরিত্যাগে চাপ ও মুক্তির শর্ত দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন গ্রেগরি।
প্রায় ১৩ বছর কারাগারে থাকার পর গ্রেগরি তার বিশ্বাসের শক্তি দিয়ে রাজা তৃতীয় তিরিডেটসের মনজয়ে সমর্থ হন। নিজে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে ৩০১ সালে আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা দেন রাজা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
এএসআর