অবশ্য নিজেদের বরং ডলফিন সংরক্ষণকারী দাবি করে দেওয়া জেলেদের বক্তব্যের পক্ষে দাড়িয়েছেন পরিবেশবিদরা।
রিও ডি জেনিরো থেকে কয়েক মাইল দূরের নদীটিতে ঘটনাটি ঘটছে।
অভূতপূর্ব এ ঘটনার ক্ষেত্রে ডলফিনগুলো মরার মতো ভান করে ধীরে ধীরে ভাসতে থাকে, যেন অন্য মাছ কাছে আসে। যখন প্রচুর মাছ কাছে চলে আসে, তখন ওরা পানির ওপর লাফিয়ে উঠে জেলেদের সংকেত দেয়। জেলেরা তখন জাল ফেলে মাছগুলোকে ধরে ফেলেন। বিনিময়ে বন্ধু প্রাণীগুলোকে খাবার দেন মাছ শিকারিরা।
ডলফিনগুলোর বোরাচা, ব্যাটম্যান, জ্যাক, স্কুবি, কারোবা, অ্যাভালানস্ ইত্যাদি আলাদা আলাদা নাম আছে মাছ ধরতে নিয়মিত নদীটিতে যাওয়া জেলে লুকাস ফার্নান্দেজ। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় ওরা। ডলফিনগুলোর সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া চমৎকার’।
সামুদ্রিক প্রাণিবিজ্ঞানী ড. পেদ্রো ভলমার ডে কাস্টিলহো বলেন, ‘হয়তো নিজেদের দৈনন্দিন কাজ ও খেলার অংশ হিসেবে জেলেদের সহায়তা করে ডলফিনগুলো। প্রতিবার মাছ ধরার পর জেলেরা ওদের খাবার দেওয়ার কারণেও এটি করতে পারে। আমার বিশ্বাস, এটি আমোদপ্রিয় প্রাণীগুলোকে সামাজিক প্রশান্তিও দেয়’।
কিন্তু সম্প্রতি সমুদ্র সৈকতে কয়েকদিন পর পরই ডলফিনের মৃতদেহ ভেসে ওঠায় উদ্বিগ্ন প্রাণীবিদ ও সংরক্ষণবাদীরা। তারা জানান, মৃত ডলফিনের অনেকগুলোর গায়ে, মুখে বা পাখায় মাছ ধরার জালের দাগ দেখা গেছে।
অবশ্য মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকা সাগর, নদী বা বড় হ্রদের কাছের ছোট ছোট জলাশয়েও অবৈধ শিকারিদের গোপনে পাতা জালে আটকে প্রায়ই মারা যাচ্ছে বা আহত হচ্ছে ডলফিনেরা।
তাই মাছ ধরতে সাহায্য করতে গিয়ে জেলেদের জালে, না ওই অবৈধ ডলফিন শিকারিদের ফাঁদে আটকা পড়ছে ডলফিনগুলো- সেটি নিশ্চিত হতে পারেননি প্রাণীবিদ ও সংরক্ষণবাদীরা।
কিন্তু পরিবেশবাদীরা বলছেন, জেলেরা মাছ ধরার কাজে লাগিয়ে বরং ডলফিনদের অবৈধ শিকারের হাত থেকেও রক্ষা করে যাচ্ছেন। কারণ, প্রতিদিনকার নজরদারি থাকছে এ কাজের মাধ্যমে।
আর জেলেদের বক্তব্য হচ্ছে, ডলফিনগুলো তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করে। ওরা না থাকলে তাদের আয়ও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ওদের ভালো-মন্দের বিষয়েও তারা বেশ সচেতন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
এএসআর