ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

৪ দিন পর লন্ডনে পরিবারের দেখা পেলো টিমোথি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
৪ দিন পর লন্ডনে পরিবারের দেখা পেলো টিমোথি টিমোথি

ঢাকা: ছয় বছর বয়সী টিমোথির লোম ভর্তি আদুরে শরীর। নীল রঙের নেকটাই বাধা টিমোথি মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ ১২২ ফ্লাইটে সিডনি থেকে লন্ডনে যাত্রা করেছিল। মাঝখানে ট্রানজিট রয়েছে কুয়ালালামপুরে।

এই যাত্রায় টিমোথির পরিবার আলাদা ফ্লাইটে ভ্রমণ করছিল। ২২৪ জন যাত্রী আর টিমোথিকে নিয়ে সিডনি থেকে উড়াল দেয় প্লেনটি।

তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অস্ট্রেলিয়ার এলিস স্পিংস এয়ারপোর্টে দ্রুত অবতরণ করতে হয়।

টিমোথির মালিক সুসাম মেরলে এই সংবাদ শুনে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, যখন ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য জরুরি অবতরণ করার ঘোষণা কথা শুনবেন আর আপনি জানবেন যে আপনার একটি পোষা প্রাণী আছে, তখন আপনার মেরুদণ্ড ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
 
শেষ পর্যন্ত চারদিন পর মালিকের কাছে ফিরে এসেছে মাল্টেজ টেরিয়ার প্রজাতির এ কুকুর। তবে এর মধ্যে এক রাত টিমোথিকে একা কাটাতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এয়ারপোর্টে।

টিমোথির মালিক সুসান মেরেল জানান, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন হয়তো কুকুরটি খালি বাক্সসহ রানওয়েতে পড়ে রয়েছে। হয়তো খাবার বা পানিও পাচ্ছে না।  

তবে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলা হয়, টিমোথি কখনই একা ছিল না। এলাইস স্পিংস কমিউনিটি তার সঙ্গে সময় কাটান। তাকে খাবার সাধেন ও রাতে থাকার জায়গা করে দেন। এছাড়াও একটি স্থানীয় কুকুরের সঙ্গে খেলার সুযোগও করে দেওয়া হয়।

পেট ফ্লায়ার কোম্পানির মালিক পিটার মেলভিলে টিমোথির এই ভ্রমণের দেখাশোনা করছিলেন। তিনি বলেন, এই ধরনের দীর্ঘ ফ্লাইটে পোষা প্রাণীদের একা ভ্রমণ অস্বাভাবিক কিছু না। তবে আমি মনে করতি পারছি না যে এমন কোনো পরিস্থিতিতে আগে পড়েছি। কোনো ফ্লাইট জরুরি অবতরণের পর আবার পোষা প্রাণীর ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা।  

টিমোথি একাই ভ্রমণ করছিলো, তার মালিক মেরেল ছিলেন ভিন্ন এয়ারলাইন্সে।  

মেরেলের পুরো পরিবার সিডনি থেকে লন্ডনে স্থানান্তর হয়েছে। যার অংশ হিসেবে এটাই ছিল কুকুরটির প্রথম প্লেন ভ্রমণ।

তবে ফ্লাইট ত্রুটিতেই টিমোথির ভোগান্তির শেষ হয়নি। সে যখন আরেকটি ফ্লাইটে কুয়ালালামপুর পৌঁছালো, দেখা গেলো তার ইমিগ্রেশনের সব কাগজাদি মূল ফ্লাইটে রয়ে গেছে। যেটা এলিস স্পিংসে মেরামত হচ্ছে। ফলে সে কুয়ালালামপুর-লন্ডন সংযোগ ফ্লাইটও মিস করে।  

মেরেল বলেন, আমাদের ফ্লাইট হিথ্রোতে এসে পৌঁছায় সকাল সাড়ে এগারোটায়। আর টিমোথির পৌঁছানোর কথা ছিল সকাল সাড়ে ৫টায়। আমরা ফ্লাইট থেকে নেমেই ওকে আনতে যাই। কিন্তু দেখি সে এসে পৌঁছেনি।  

অবশেষ ১৭ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ শেষে গত ২২ জানুয়ারি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে দেখা হয় তিমোথির। মেরেল বলেন, টিমোথি খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল। সে কাঁদছিল এবং যন্ত্রণায় গোঙাছিল। তবে সবশেষে মনে হচ্ছে ও আমাদের দেখে যারপরনাই খুশি, আমরাও।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এমএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।