ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

দক্ষিণ কোরিয়ায় নিষিদ্ধ হলো কুকুর হত্যা

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৮
দক্ষিণ কোরিয়ায় নিষিদ্ধ হলো কুকুর হত্যা ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত কুকুরের মাংস খাওয়া ও বিক্রির জন্য কুকর হত্যা অবৈধ ঘোষণা করেছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।  

যারা কুকরের মাংস খাওয়ার বিরোধিতা করেছেন, তাদের জন্য এ রায় আপাতপক্ষে বিজয় এনে দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে আদালতের রায়টি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

ওয়াশিংটন ডিসির অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার ইনস্টিটিউট বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রত্যেক বছর প্রায় ২০ লাখ কুকুর হত্যা করা হয়। এছাড়া ১ লাখ মেট্রিক টন কুকুরের মাংস খাওয়া হয়। দ্য হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল নামে আর একটি সংস্থা বলছে, বিশ্বে মাংসের জন্য প্রত্যেক বছর তিন কোটি কুকুর হত্যা করা হয়। তাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে এ চর্চা অনেকদিন ধরে চলে আসছে।  

দক্ষিণ কোরিয়ার আদালতটির রায় গঠন করা হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিলে। কিন্তু রায়ের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে জুনের শেষে। অ্যানিম্যাল রাইটস অ্যাকটিভিস্ট সংগঠন কো-এক্সিসটেন্স অব অ্যানিম্যাল রাইটস অন আর্থ (কেয়ার) কুকুর হত্যার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ গঠন করে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে কুকুর হত্যা নিষিদ্ধের রায় দেয় আদালত।  

গত বছরে ‘কেয়ার’ নামক সংগঠনটি দক্ষিণ কোরিয়ার বুচিয়নের একটি ফার্মের বিরুদ্ধে সঠিক কারণ ছাড়া কুকুর হত্যার অভিযোগ আনে। বুচিয়নের আদালত ফার্মের মালিককে কুকুর হত্যার জন্য অভিযুক্ত করেন। মাংস খাওয়া কুকুর হত্যার বৈধ কারণ নয় বলে অভিমত দেন বুচিয়নের আদালত।  

আদালতের রায়ে আরও বলা হয়, ওই ফার্মের মালিক বিল্ডিং ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কুকুরের মাংসের জন্য কোনো ফার্ম অনুমোদন দেয় না। ফার্মের মালিককে দুই লাখ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। এছাড়াও তার আপিল আবেদনের অধিকার খারিজ করে দেওয়া হয়।  

অ্যানিম্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সংগঠন কেয়ারের আইনজীবী আস্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আদালতের প্রথম রায়েই মাংসের জন্য কুকুর হত্যা অবৈধ করা হয়েছে।  

তবে কুকুরের খামার ও কসাইখানার মালিকরা আদালতের এ রায়ের বিরোধিতা করছেন। তারা সরকারের কাছে কুকুর মাংস খাওয়ার বৈধতা দাবি করছেন। এছাড়াও কসাইখানাগুলোর লাইসেন্সের দাবিও জানিয়েছেন তারা।  

খামার মালিকরা বলছেন, গরু, শূকর, মুরগি, হাসের মাংস খাওয়া বৈধ হলে, কুকুরের মাংস খাওয়া কেন বৈধ হবে না।  

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রজন্ম কুকুরের মাংস খাওয়া ও হত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান করছেন। তারা কুকুরকে পোষা প্রাণী হিসেবে দেখতেই ভালোবাসেন। এক মতামত জরিপে দেখা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার ৬০ শতাংশ মানুষ কখনো কুকুরের মাংস খায়নি। ৫৭ শতাংশ মানুষ কুকুর বাণিজ্যের বিরোধিতা করেন আর ৪৬ শতাংশ মানুষ কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধের পক্ষে মত দেন। মোট জনসংখ্যার অর্ধেক দক্ষিণ কোরিয়ান মানুষ মনে করেন, দীর্ঘদিনের এ চর্চা বন্ধ করা উচিত।  

বাংলাদেশ সময়: ০২২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৮
এএইচ/এএ    

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।