ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অফবিট

কোমা থেকে জেগেই বাবার দিকে তাকিয়ে হাসলো শিশু!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
কোমা থেকে জেগেই বাবার দিকে তাকিয়ে হাসলো শিশু! হাসিখুশি শিশু মাইকেল। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের ১৬ মার্চ। হঠাৎ নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এমা ও স্টুয়ার্ট ল্যাবুশান দম্পতির ১৪ মাস বয়সী ছেলে মাইকেলের। তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসকরা তাকে ইলেকট্রিক শক দেন ও অ্যাড্রেনালিন ইনজেক্ট করেন তার শরীরে। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা তাকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখেন যেন তার মস্তিস্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

পাঁচদিন কোমায় ছিল শিশু মাইকেল। কিন্তু সবাইকে তাক লাগিয়ে কোমা থেকে জেগেই মাইকেল হেসে ওঠে তার বাবার দিকে তাকিয়ে।

 

সোমবার (২৮ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।

মাইকেল ছাড়া আরও দু’টি বাচ্চা আছে ল্যাবুশান দম্পতির। তারা যুক্তরাজ্যে থাকেন।  

ওই দম্পতি জানতে পারেন, ছেলে মাইকেলের বিরল এক টিউমার হয়েছে, যা তার হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচলে বাধা দিচ্ছে। টিউমারটির দৈর্ঘ্য পাঁচ সেন্টিমিটার ও পুরুত্ব ২ ইঞ্চি। ছোট শিশু মাইকেলের ছোট্ট হৃদপিণ্ডের জন্য সেটি ভয়াবহ।

ডাক্তাররা বলেন, মাইকেলের অবস্থা এতোই বিরল ছিল যে যুক্তরাজ্যের কোনো ডাক্তারেরই এরকম টিউমার সরানোর অভিজ্ঞতা ছিল না।  

এমা বলেন, তাদের জন্য দুটো পথ খোলা ছিল। হয় হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের জন্য চেষ্টা করতে হতো, না হয় দেশের বাইরে কোনো ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হতো।  

ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্রে বোস্টন শিশু হাসপাতালের খোঁজ পান তারা। ওই হাসপাতালটির দাবি, ‘গত ১০ বছর ধরে তাদের কার্ডিয়াক টিউমার প্রোগ্রামের সাফল্য শতভাগ। ’ 

এমা বলেন, আমরা হাসপাতালটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নেই। বিশেষ করে তাদের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. পেদ্রো দেল নিনো ও ডা. জেভার সম্পর্কে খোঁজ করি। তাদের সাফল্য আসলেই শতভাগ এবং অনেক সুনাম রয়েছে। তখন আমরা ঠিক করলাম ওখানেই চেষ্টা করে দেখবো।  

হাসপাতাল থেকে বলা হয়, সার্জারি করতে খরচ হবে এক লাখ ৪৭ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে রয়েছে আনুষঙ্গিক অন্য খরচ। কিন্তু ল্যাবুশান দম্পতি মাইকেলকে বাঁচিয়ে রাখতে যে কোনো কিছু করতে প্রস্তুত।  

এমা আরও বলেন, আমাদের বাচ্চার প্রাণ বাঁচাতে যে কোনো অংকের টাকাই খরচ করতে রাজি ছিলাম আমরা।  

মা এমা ও বাবা স্টুয়ার্ট ল্যাবুশানের সঙ্গে মাইকেল।  ছবি: সংগৃহীত

মাইকেলের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি ‘গোফান্ডমি’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন।  

এমা জানান, অসংখ্য মানুষ এতে সাড়া দেন। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে অনেক মানুষ তাদের আর্থিক সাহায্য করেন। তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ এমা ও স্টুয়ার্ট।  

ইতোমধ্যে মাইকেলের হৃদপিণ্ডের ভেতরে পেসমেকার বসানো হয়েছে। এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।  

সার্জারির জন্য ২০২০ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাবে মাইকেল ও তার পরিবার। তবে এই মুহূর্তে মাইকেলের সঙ্গে প্রতিটি সময় উপভোগ করছেন তারা।  

মাইকেলকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ওকে দেখে অন্য সব বাচ্চাদের মতোই মনে হয়। ও অনেক হাসিখুশি থাকে। আমরা ওকে নিয়ে গর্বিত।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯ 
এফএম/এএ

 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।