ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

জাতীয় শিশুদিবস

‘বাংলাদেশ’ মহাকাব্যের রচয়িতার জন্মদিন

ড. মুসতাক আহমেদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৫
‘বাংলাদেশ’ মহাকাব্যের রচয়িতার জন্মদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

শতাব্দীর শেকল ভেঙে মুক্তির বার্তা নিয়ে এসে যিনি স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের করে দিয়েছেন, যিনি বাংলার আপামর জনগণের মনন-অভিধানে গেঁথে আছেন শ্রদ্ধাভরে, তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ ১৭ মার্চ তাঁর জন্মদিন।

সেজন্য আজ জাতীয় শিশুদিবস। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পিতা শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা সায়েরা খাতুনের চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয় সন্তান। তাঁর জন্মদিন আমরা জাতীয় শিশুদিবস হিসেবে পালন করছি। এমনি এমনি পালন করছি না। এর তাৎপর্য রয়েছে। শৈশব থেকে তিনি জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচার-শোষণ-পীড়ন খোলা চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন। সামাজিক পরিসরে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িক চেতনার।

৭ বছর বয়সে তিনি পার্শ্ববর্তী গিমাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে তিনি মাদারীপুর ইসলামিয়া হাইস্কুল, গোপালগঞ্জ সরকারি পাইলট স্কুল ও পরে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে লেখাপড়া করেন। মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সময় তিনি চোখের দুরারোগ্য বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে কলকাতায় তার চোখের অপারেশন হয়। এই সময় কয়েক বছর তার পড়াশোনা বন্ধ থাকে। ১৯৪২ সালে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে কলকাতায় গিয়ে বিখ্যাত ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং খ্যাতনামা বেকার হোস্টেলে আবাসন গ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিএ পাস করেন। শেখ মুজিবুর রহমান এই সময় ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সংস্পর্শে আসেন।

সময়টি ছিল বাংলার ইতিহাসের এক উত্তাল সময়। দেশপ্রেম, স্বাজাত্যবোধ আর হিন্দু, মুসলিম ঐক্যের পাশাপাশি কংগ্রেস মুসলিম লীগের বিভেদের রাজনীতিতে ক্ষত-বিক্ষত বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবন। বঙ্গবন্ধুর বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক বিকাশ হয়েছিল এরকম বিরাজমান আবহে। উদার গণতান্ত্রিক চেতনার পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িক ও জাতীয় ঐক্যের চেতনায় তার দীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছিল।

১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় শান্তি স্থাপনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অসম সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন। যা তাকে পরবর্তী জীবনে হিংসা, বিদ্বেষের বিরুদ্ধে অহিংস, অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি আস্থাবান করে তুলেছিল। ১৯৭১ সালে আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে যে অসহযোগ আন্দোলন তিনি করেছিলেন, তার শিক্ষা তিনি পূর্বতন সময়েই গ্রহণ করেছিলেন।

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্তির পর শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলায় চলে আসেন এবং ঢাকাকে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন দেন ও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এ কারণে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়।

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনামলে এক যুগেরও অধিককাল তিনি কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন; ন্যূনতম দুইবার ফাঁসির কাষ্ঠে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন; ১৮ বার কারাবরণ করেছেন। সারাজীবন অসংখ্য মামলার মোকাবেলা করেছেন। কিন্তু কোনো দিন বাংলার মানুষের স্বাধিকার ও অধিকারের প্রশ্নে থমকে দাঁড়াননি। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন শুরু হয় তার শৈশব থেকেই। ব্রিটিশ আমলে ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবার তাকে কারারুদ্ধ হতে হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ প্রথম ভাষা আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে কারাবরণ আবার শুরু হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত সময়ে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা বাতিলের পর তিনিই ছিলেন ওই মন্ত্রিসভার একমাত্র সদস্য যাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আর মিথ্যা মামলায় তাকে বারবার জেলে যেতে হয়েছে, তাতে তিনি  মনোবল হারাননি। যতটুকু সময় কারাগাররে বাইরে থাকার সুযোগ পেয়েছেন তাও হয় হুলিয়া, না হয় গোয়েন্দাদের কঠোর নজরদারির মধ্যে কেটেছে। প্রকৃতপক্ষে জেলে জীবনটা বঙ্গবন্ধুর জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছিল। ফলে জেলভীতি তার ছিলই না, বরং শাসকগোষ্ঠীকে অবাক করে দিয়ে দিনের পর দিন তিনি জেলে কাটিয়েছেন, কখনো আপস করনেনি। তিনি যদি আপস করতেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও হতে পারতেন। শুধু দেশ ও জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জীবনের অধিকাংশ সময় জেলেই কাটিয়েছেন।

একটি স্বাধীন দেশের স্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন তাই একটি ঐতিহাসিক দিন। আনন্দময় দিন। কিন্তু এ দিনটি কেন জাতীয় শিশুদিবস হলো? কেন এ দিনটিকে শুধু শিশুদের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে? কারণ, বঙ্গবন্ধু সোনামণি শিশুদের অত্যন্ত আদর করতেন, ভালোবাসতেন। শিশুদের নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিলো। তিনি বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। আগামীতে দেশগড়ার নেতৃত্ব দিতে হবে তাদেরকেই। তারা জ্ঞানে-গরিমায় সমৃদ্ধ হোক। সৃজনশীল মুক্তমনের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক—সবসময়ই তিনি তা আশা করতেন। সেই পাকিস্তান আমল থেকেই তাঁর মধ্যে এমন ভাবনা কাজ করত। আর স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি যখন সবার মাথার মণি, তখনো দেখা যায়— শিশুদের কথা তিনি একটুও ভোলেননি। শিশুদের কোনো সমাবেশে গেলে বা শিশুরা গণভবনে তাঁর কাছে এলে তিনি শিশুর মতো তাদের সঙ্গে মিশে যেতেন; তাদের আনন্দ-খুশিতে শরিক হতেন।

১৯৪৮ সন থেকে ‘৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ঐতিহাসিক ছয় দফা, স্বায়ত্ত্বশাসনের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ হন। ’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ছয় দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায় বাঙালি জাতি। এতে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের আসন লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাঙালির এই নির্বাচনে বিজয়কে মেনে নেয়নি। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তাস্তরে তারা নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। আর অপেক্ষা নয়, ’৭১-এর মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বর্জকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ’ বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণে সাড়া দিয়ে সেদিন গোটা বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

বঙ্গবন্ধু কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘরসহ অন্যান্য সংগঠনের শিশুবন্ধুদের অনুষ্ঠান ও সমাবেশে গিয়েছেন। তাদের মার্চপাস্ট, লাঠিখেলা ইত্যাদি পরিবেশনা উপভোগ করেছেন। তিনি এত সহজে, এত আন্তরিকভাবে শিশুদের সঙ্গে মিশে যেতেন যে, শিশুরা তাঁকে একান্ত আপন করে নিতো। জানা যায়, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক-বৃদ্ধ সবার কাছেই তিনি ছিলেন মুজিব ভাই; এই সম্বোধনই তিনি পছন্দ করতেন। এর ফলে বয়সের ব্যবধান ঘুচে যেতো। তিনি হয়ে উঠতেন সবার একান্ত আপন, আত্মার আত্মীয়। এই অসাধারণ গুণের জন্যই তো তিনি পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন; এনে দিয়েছিলেন স্বাধীনতারে অমূল্য রতন।

একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু করলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাসভবন থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কারাগারে আটক রেখে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তার প্রথম বিচার শুরু করে। ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বীর বাঙালি ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে নেয়। জন্ম হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

৭২-এর ১০ জানুয়ারি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ বেশি দিন পাননি।

শিশুদের প্রিয় মানুষ বঙ্গবন্ধু শিশুদের কল্যাণে ১৯৭৪ সালের ২২ জুন জাতীয় শিশু আইন (চিলড্রেন অ্যাক্ট) জারি করেন। এই আইনের মাধ্যমে শিশুদের নাম ও জাতীয়তার অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সব ধরনের অবহেলা, শোষণ, নিষ্ঠুরতা, নির্যাতন, খারাপ কাজে লাগানো ইত্যাদি থেকে তাদের নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু নিহত না হলে শিশুদের জন্য নিশ্চয়ই তিনি অনেক বড় কিছু করতেন। কারণ তাঁর স্বপ্নই ছিলো একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়া; আর শিশুদেরকে তিনি মনে করতেন সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার যোগ্য কারিগর।

হাজার বছরের ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে জাতিসত্তা নির্মাণ ও বিকাশের ধারায় ইতিহাসের প্রয়োজনে অপরিহার্য হয়ে পড়ে ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব। মাটি-মানুষ, স্বদেশ, স্বকালে বিরাজমান জনগোষ্ঠীর চেতনাকে সামগ্রিক মূল স্রোতধারায় মিলনের যিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেন-ইতিহাস তাঁকে পথ করে দেয়, তিনিও নির্মাণ করেন ইতিহাস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে জাতি রাষ্ট্র নির্মাণে এমন একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’। তিনি সমগ্র জাতির আকাঙ্ক্ষা, চাহিদা ও মনোজগতের অব্যক্ত অনুভূতিকে মূর্ত করে তুলেছিলেন কথায়, কণ্ঠে, চেহারায় ও আদলে, প্রতিবাদে, প্রতিরোধে ও মরণজয়ী সাহসে।

বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শিশুদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশুদিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ দিবসটি পালন শুরু হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় এসে জাতীয় শিশুদবিস পালনের রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দেয়। ইতিহাস বিকৃতির চরম পর্যায়ে উঠে যায় বিএনপি-জামায়াত। তবে দলীয় এবং বেসরকারি পর্যায়ে দিনটি পালন অব্যাহত ছিল। ২০০৯ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতায়। এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে আবার পালিত হচ্ছে জাতীয় শিশুদিবস।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে একদিন কচিকাঁচার মেলার কিছু ক্ষুদে বন্ধু তাদের আঁকা মুক্তিযুদ্ধের ছবি নিয়ে যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অফিসে- ছবিগুলোর অ্যালবাম তাঁর হাতে তুলে দিতে। ছবিগুলো বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করে জানান, তাঁর রাশিয়া সফরের সময় সে দেশের শিশুদের জন্য নিয়ে যাবেন শুভেচ্ছা-উপহার হিসেবে। সে সময় শিশুদের সঙ্গে বড়রাও ছিলেন কয়েকজন। বঙ্গবন্ধু খুব খুশি হলেন ক্ষুদে শিল্পীবন্ধুদের কাছে পেয়ে। তিনি তাদের হাসিমুখে আদর করলেন। বঙ্গবন্ধু আগ্রহভরে শিশুদের আঁকা ছবিগুলো দেখছিলেন- আর ছবি ও ছবির আঁকিয়েদের প্রশংসা করছিলেন মন খুলে।

তিনি মুগ্ধ হয়ে বললেন, 'আমার দেশের শিশুরা এমন নিখুঁত ছবি আঁকতে পারে, এসব না দেখলে তা বিশ্বাস করা যায় না’।

আজ প্রেট্রোল বোমা, ককটেল, গ্রেনেড দিয়ে আমাদের শত শত পবিত্র-নিরপরাধ শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই কুচক্রি মহল সুযোগ পেতো না। তিনি আমাদের সকল নিষ্পাপ শিশুর অন্তরে ঘুমিয়ে আছেন। আজকের বাংলাদেশ নামক যে মহাকাব্য রচিত হয়েছে তার রচয়িতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা শব্দটি বাঙালির মনন-অভিধানে যুক্ত করেছেন।

* সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ইমেইল: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।