ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

উড়ে এসে জুড়ে বসে…

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
উড়ে এসে জুড়ে বসে…

কেউ যদি নিজের যোগ্যতায় রাজনীতিতে অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারেন তাহলে তিনি হন জননন্দিত। যার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক না থাকার পরও বিশেষ ক্ষমতায় বারবার পেয়ে যান নেতার ‘টিকিট’, তিনি হন জননিন্দিত।

আওয়ামী লীগ সরকার দিন বদলের সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনীতি, অবকাঠামো, কূটনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা ও সামগ্রিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ।


 
জনগণের কল্যাণে স্বাধীনতার পক্ষের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাফল্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার প্রতি দেশবাসী আবারও আস্থা রাখবে বলে সরকারপ্রধানও আত্মবিশ্বাসী।

দল হিসেবেও আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, আগামী নির্বাচনে জনগণ আবারও এ দলকেই বেছে নেবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে রাজনৈতিক দলটি ক্ষমতায় আসবে তাদের নেতৃত্বেই ২০২১ সালে জাতি উদযাপন করবে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী। এছাড়া বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীও ২০২০ সালে।  

গত ১০ বছরে দেশে তরুণ ভোটার বেড়েছে ২ কোটি ২৫ লাখের বেশি। এই তরুণরাই দেশের মূল চালিকাশক্তি। তারা ভালো-মন্দের হিসাব জানে, যোগ্য নেতৃত্ব চিনে নিতে ভুল করে না।
 
তবে এ কথা সত্য যে, রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র করা হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি এর প্রভাব পড়ে অঙ্গ সংগঠনের ওপরও। মাঠের রাজনীতিতে ত্যাগী নেতারা যদি যথাযথ মূল্যায়ন না পান, তাহলে রাজনীতির প্রতি নতুন প্রজন্মের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। হঠাৎ উড়ে এসে জুড়ে বসা ব্যক্তি যদি ক্ষমতা পান, তার কাছে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা অবমূল্যায়নের শিকার হন, যা রাজনীতির জন্য শুভ লক্ষণ নয়।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও এর বিরোধিতা নিয়ে কিছু অমীমাংসিত ইস্যু আছে। এসব ইস্যুর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই যথাযথ হবে না। দেশের অনেক রাজনীতিবিদ এই ইস্যু নিয়ে আন্তরিক নন। তারা একটি অস্পষ্ট অবস্থান নিয়ে আছেন। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে কেউ এই ইস্যুকে ব্যবহার করছেন, আবার কেউ মন থেকে স্বাধীনতাবিরোধী হলেও নিজেকে প্রচার করছেন মুজিবীয় আদর্শের লোক হিসেবে। ফলে সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং মাঠের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা হচ্ছেন অবমূল্যায়নের শিকার।

প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি হচ্ছে-মানবসেবা। দলের প্রতি যাদের ত্যাগ আছে, তাদের যদি জনপ্রতিনিধির মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে সমাজ তথা দেশ উপকৃত হবে। অবশ্য বিশেষ বিবেচনায় ঐতিহ্যবাহী পরিবারের বংশধরদের জনপ্রতিনিধির মনোনয়ন দেওয়া যায়, যদি সবার কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে।

কিন্তু জনগণ এখন অনেকটা চক্রবন্দি। কিছু প্রভাবশালীর কারণে যোগ্য নেতৃত্ব না পেয়ে তারা হতাশাগ্রস্ত হচ্ছে, আগ্রহ হারাচ্ছে দেশের নানান সংকটে অগ্রগামী হতে। যেসব রাজনীতিবিদ শুধু ক্ষমতাকেই বড় করে দেখেন, তারা আর যাই হোক দেশপ্রেমিক হতে পারেন না।

লেখক
মো. গিয়াস উদ্দিন
মো. গিয়াস উদ্দিন
সাবেক সভাপতি, জুনিয়র চেম্বার চট্টগ্রাম


বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।