ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

নতুন সরকারে সন্ত্রাসবাদে জিরো টলারেন্স চায় ভারতীয়রা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
নতুন সরকারে সন্ত্রাসবাদে জিরো টলারেন্স চায় ভারতীয়রা প্রতীকী ছবি

কলকাতা: ২৬/১১, ভারতের কালো রাত। ঠিক দশ বছর আগে ওই দিনে বিস্ফোরণ আর গুলির শব্দে কেঁপে উঠেছিল আরব সাগর তীরের মুম্বাই শহর। আজও স্মৃতিতে ভাসে নিরীহ মানুষের রক্তাক্ত শরীর। আজও কানে ভাসে গ্রেনেডের আঘাদে বুকফাটা আর্তনাদ। 

মুম্বাইয়ের হোটেল তাজ অ্যাটাক। সেদিনের জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন ১৭৪ জন নিরীহ মানুষ।

আহতের সংখ্যা ৩শ জন। যার মধ্যে আজও অনেকে সেই আঘাতের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন শরীর ও মনে। এই ঘটনার আট বছর বাদে ২০১৬ সালের ১ জুলাই প্রিয় প্রতিবেশী বাংলাদেশেও নেমে এসেছিলো আরেক অন্ধকার রাত। জঙ্গি হামলা হয় ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিসানে। হামলায় বিদেশিসহ নিহত হন ২২ জন নিরপরাধ মানুষ।  
 
‘সন্ত্রাসবাদ’। যার কোনো ধর্ম হয় না। হয় না জাতি বা বর্ণ। বন্দুকের নল থেকে বের হওয়া গরম সীসা ভেদাভেদ করে না কোনো কিছু। কাকে মারছি বা কেন মারছি। স্বার্থ একটাই, তাদের উপস্থিতি কায়েম করা। যা আজ গোটা বিশ্বের শরীরের মরণ রোগের মতো বাসা বেঁধেছে। তাই মুম্বাই হোক বা ঢাকা, আরব সাগরের পাড় হোক বা পদ্মার কিনারা- গোটা বিশ্ব জুড়ে দগদগে ঘা, নাম 'সন্ত্রাসবাদ'। দুই প্রতিবেশী দেশে আজ সন্ত্রাসবাদের নজরে। আর দুই রাষ্ট্রই অনুভব করেছে এই রোগের চিকিৎসা কোনো একটি দেশের হাতে নেই। এই লড়াই লড়তে হবে হাত ধরে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
 
বছর শেষে বাংলাদেশ ও আগামী বছরের প্রথমার্ধে ভারতে- দুই বন্ধুপ্রতিম দেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে, নির্বাচক বা বিবেচিত ভোটাদের অনেক কিছু ভাবার সময় এসেছে। কারণ উন্নয়শীল রাষ্ট্রের প্রধান বিশেষত্ব হলো শান্তি। এই রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখিয়েছে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকার। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রশাসন সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে যে 'জিরো টলারেন্স' নীতি নিয়েছে গোটা বিশ্বে এমনকি ভারতের কাছেও শিক্ষণীয় বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল।
 
তাই প্রতিবেশী দেশের নির্বাচন, একান্ত সে দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও এবারে ভারতীয়দের বিলক্ষণ উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারত সরকারের মন্ত্রী  পর্যায়ের বিভিন্ন বৈঠকেও বারবার উঠে এসেছে এই নীতির প্রসঙ্গ। এই নিতির ফলও পাওয়া গেছে হাতেনাতে। অর্থাৎ বাংলাদেশের 'জিরো টলারেন্স' নীতি শুধু সে দেশে নয়, বিভিন্নভাবে সহায়ক হয়েছে এই উপমহাদেশে।  

বাংলাদেশ সরকারের এই কড়া মনোভাবের ফলে পুরোপুরি শেকড় উপড়ানো গেছে তা এখনই বলা যাবে না। তবে এই শুভ উদ্যোগ যে রোগের ওষুধের মতো কাজ করেছে একথা বলা যায়।  
 
সন্ত্রাস দমনে এই প্রক্রিয়াকে আরও তরান্বিত করতে দরকার ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারের। সেই প্রক্রিয়ায় হাঁটছে বাংলাদেশ। দেশের সবকটি রাজনৈতিক দল এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়া যে সুসংহত হবে, তা আশা করা যাচ্ছে। তবে যে সরকারই আসুক, ভাবী সরকার যাতে এভাবেই সন্ত্রাস দমন করে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে পারে সেটা নির্ধারণ কিন্তু সে দেশের জনগনকেই করতে হবে।

 
একজন গণতন্ত্র প্রিয় ভারতবাসী হিসেবে মনে করি সমাজে শান্তি থাকলে তবেই রাষ্ট্রের উন্নতি হয়। রাষ্ট্র উন্নত হলে তার আঁচ প্রতিবেশীর গায়েও লাগে। বাংলাদেশ যে উন্নয়নের প্রদীপ জ্বালিয়েছে, সেই প্রদীপ আগামীতে মশালে পরিণত হয়ে পথ প্রশস্ত করবে গণতন্ত্রের, পথ দেখাবে সন্ত্রাসমুক্ত এশিয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।