ঢাকা: তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আগামী ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। সুন্দরবনের কাছে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ২৬ নভেম্বর মহাসমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছে জাতীয় কমিটি।
এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জাতীয় কমিটির স্লোগান ও প্রচারপত্রে ভারত-চীনবিরোধী বক্তব্যের কারণে এ আন্দোলনের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একইসঙ্গে আগামী ০৩ ডিসেম্বর একই দাবিতে সারা দেশে মিছিল-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
সোমবার (২১ নভেম্বর) ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আপত্তি উপেক্ষা করে সুন্দরবনের সন্নিকটে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। ওয়ার্কার্স পার্টি দলগতভাবে ও তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির শরিক হিসেবে সুন্দরবনের ক্ষতিসাধন করবে এমন প্রকল্প সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপন করেছে। এবং প্রকল্পটি সুন্দরবনের নিকটতম এলাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে বিকল্প স্থানে করার দাবি জানিয়ে আসছে’।
‘আমরা এখনও আশা করছি, সরকার এ বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। কিন্তু দুভার্গ্যক্রমে এ ধরনের একটি জাতীয় বিষয়ে কোনো সমাধানের প্রশ্নে না গিয়ে বিএনপি-জামায়াত একে তাদের আন্দোলনের ইস্যুতে পরিণত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে’।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্যদিকে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেউ কেউ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে প্রয়োজনে ‘রাজনীতি পরিবর্তন করা হবে’ এমন উক্তি করেছেন। ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে বিধায় জাতীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত কেউ কেউ একে ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের নগ্ন প্রকাশ’ বলেও অভিহিত করছেন।
‘জাতীয় কমিটির মিছিল-সমাবেশে ভারতবিরোধী বক্তব্য ও স্লোগান দিতেও তারা দ্বিধা করছেন না। প্রচারপত্রে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করার দাবিও তুলেছে। কেবল তাই নয়, ওই প্রচারপত্রে ‘উন্নয়নের নামে বাংলাদেশকে ভারত ও চীনের ডাস্টবিন বানানো চলবে না’ বলা হয়েছে’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ওয়ার্কার্স পার্টি ও আরো অন্যান্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এ আন্দোলনকে তাদের কারো কারো রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে এসব স্লোগান তুলে ধরেছে। চীন-ভারত-রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে এক কাতারে ফেলাও রাজনৈতিকভাবে সঠিক নয়’।
‘এ স্লোগানের ভিত্তিতে কর্মসূচি পালিত হলে তা সমস্ত আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং অন্য সকল আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়া বিএনপি-জামায়াতকে এই আন্দোলন তাদের রাজনৈতিক অভিলাষ চরিতার্থ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে। এ প্রচারপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য জাতীয় কমিটির সদস্য সচিবকে অনুরোধ করা হলেও তিনি তা বিবেচনায় নেননি’।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ অবস্থায় ওয়ার্কার্স পার্টি ২৪-২৬ নভেম্বর ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
‘একইসঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টি সুন্দরবন রক্ষা ও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থানান্তরের দাবিতে আগামী ০৩ ডিসেম্বর সারাদেশে সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৬
এসকে/এএসআর