ঢাকা: সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সময়েই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতারা। প্রয়োজনে বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে তারা।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেও দলটি জানিয়ে আসছে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও কঠোর অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরিয়ে আনা হবে না। এতে নির্বাচনে বিএনপি না এলে তাদেরকে আনার কোনো উদ্যোগও নেওয়া হবে না। নির্বাচন যথা সময়েই সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। আর এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মতোই কঠোর অবস্থানে রয়েছে ১৪ দলের শরিকরাও।
১৪ দলের নেতারা জানান, নির্বাচন অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী হতে হবে এবং সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্ধারিত সময়েই তা হতে হবে। বিএনপি যে দাবি করে আসছে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এজন্য সংবিধান সংশোধনও করা যাবে না বলে তারা জানান।
আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত দলগুলোর ওই নেতাদের মতে, বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে জনগণের কোনো স্বার্থ নেই। তারা যে আন্দোলন করছে সেটা সরকার পতনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র। সরকার উৎখাত করে বিএনপি রাষ্ট্র ও সংবিধান ওলট-পালটের ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির এ আন্দোলন সফল হবে না বলেও ১৪ দল নেতারা মনে করেন।
১৪ দল নেতাদের মতে, বিএনপি সরকারে থাকার সময় কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি। যেহেতু নিজেদের সময় নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি, এ সরকারে সময়ও নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলে বিএনপি মনে করে। বিএনপির অংশ না নেওয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বা কোনো সমস্যা হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১৪ দলের অন্যতম নেতা ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন অশব্যই সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে হতে হবে। বিএনপির আমলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি তাই তারা বলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। তাদের আমলে হয়নি তাই তারা মনে করছে এ আমলেও হবে না। বিএরনপির আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই, তারা সফল হবে না।
জাসদের সভাপতি ও ১৪ দলের আরেক অন্যতম নেতা হাসানুল হক ইনু বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি ১০ দফা, ২৭ দফা আন্দোলনের নামে পাকিস্তানপন্থীদের পুনরুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্র্শের ওপর দাঁড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপি আন্দোলন করে নির্বাচন বানচালের যতই চেষ্টা করুক, যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির জন্য অপেক্ষার কোনো সুযোগ নেই, তারা না এলে নির্বাচনে কোনো প্রভাবও পড়বে না।
১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে তার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্ববধায়ক সরকার বাতিল করে দিয়েছেন। সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৩
এসকে/এসআইএস