ঢাকা: আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখনো সময় আছে, আমাদের ১০ দফা মেনে নিন। পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
বুধবার (৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। জনগণ তাদের পছন্দমতো সংসদ গঠন করবে। এটা মেনে নিন। অন্যথায় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।
তিনি বলেন, অতীতে পালিয়েছেনতো। কেউ পাকিস্তানে, কেউ হিন্দুস্তানে। পালাননি? এখনো সময় আছে সংসদে বিল নিয়ে আসুন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যুক্ত করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নাই। এদের ধাক্কা মারতে হবে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। এই সরকারের একটাই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, বিএনপিকে ধ্বংস করে দেওয়া। এটা আরও আগেই শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ১/১১ তাদের আন্দোলনের ফসল। এর প্রতিদান দিতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। পুরোপুরিভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। তাদের কথায় আন্দোলনের ফসল। আজ ১৩/১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা দেশের প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করেছে। বিএনপি দাবি মেনে নিয়েছিল। পরপর চারটি নির্বাচন হয়েছে, সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন বাকশাল করেছিল, একটি পত্রিকা রেখে সব বন্ধ করে দিয়েছিল। আজকে আবার পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছে। এর মাধ্যমে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মনে রাখতে হবে, ছোটখাট ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা যদি নেতৃত্ব দিতে পারি, তাহলে আজকের আলোচনা সার্থক হবে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। ওয়ান ইলেভেন থেকে শুরু হয়নি। তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিএনপির রাজনীতি ধ্বংস করার জন্য। খালেদা জিয়াকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্র উৎখাত করতে হবে।
মোশাররফ বলেন, ২৭ দফা এবং ১০ দফায় দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। আমাদের নেতৃত্ব দিতে হবে। কোনো ব্যক্তি নয়, দলকে দায়িত্ব নিতে হয়। তাই আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সময় নেই। নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে, সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৭ তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করে বিএনপি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজদ খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লা্হ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানি, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ ও ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
এমএইচ/আরএইচ