ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় দেশের মানুষ শোকাহত। যারা স্বজন হারিয়েছে তাদের আহাজারি চলছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মহিলা পার্টি আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিরোধী পক্ষ আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নাশকতা করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি নাশকতা হয়েই থাকে, তাহলে সরকার নাশকতা ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যর্থ। নাশকতা ঠেকাতে যারা ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
তিনি বলেন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে না পারলে রাষ্ট্র তো শোক প্রকাশ করতে পারে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে স্বজনহারাদের প্রতি সহানুভূতি জানানো যেত। এখন ব্যর্থতা ঘোচাতে অপরকে দোষারোপ করা হচ্ছে। আমরা নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে দাবি জানাচ্ছি। যারা ভায়াবহ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে না। যাদের ব্যর্থতা, অবহেলা, দায়িত্বহীনতা এবং দুর্নীতির কারণে এমন ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি দুর্ঘটনা ঘটলে তা থেকে শিক্ষা নিতে হয়, যাতে এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট কেউ জানে না। তদন্ত কমিটি কী সুপারিশ করলো কেউ জানে না। কে দায়ী? বা দায়ীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা কেউ জানতে পারে না। এখন সবকিছুতেই গলদ। ভবন তৈরি হয় কিন্তু বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না, গ্যাসের লাইন বৈধ না অবৈধ তার ঠিক নেই। এগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে যারা, তাদের খোঁজ নেই। এত বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটছে কিন্তু কারণ উদঘটনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এর চেয়ে বড় ব্যর্থতা আর হতে পারে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের বলেন, নারী-পুরুষের বৈষম্য স্বাভাবিকভাবেই দূর হয়ে যাচ্ছে। তবে সবার আগে দেশের মানুষের মধ্যে ক্ষমতার বৈষম্য দূর করতে হবে। ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, নারীদের ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নারীদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশের সব উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। আন্দোলন-সংগ্রামে নারীদের আরও এগিয়ে আসতে হবে।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, নারীকে বাদ দিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম অসম্ভব। আগামী নির্বাচনে জাতীয় মহিলা পার্টিকে আরও ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, ইসলাম নারীর পূর্ণ মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। দেশের স্বার্থে নারীরা আগামীতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদের বলেন, নারীর অধিকার রক্ষা এবং বৈষম্য দূর করতে নারীকেই এগিয়ে আসতে হবে। নারীর মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক ও কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আখতারের সঞ্চালনায় বিশ্ব নারী দিবসের আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের, হেনা খান পন্নি, অ্যাডভোকেট লাকী বেগম, মহিলা পার্টির নেতাদের মধ্যে ডা. সেলিমা খান, অধ্যাপিকা বিলকিস আখতার পুতুল, খাইরুন নাহার, রিতা নূর, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, শাহনাজ পারভীন, আইরিন গমেশ ও রেশমা। উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত, দফতর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, মহিলা পার্টির নেত্রীদের মধ্যে তাসলিমা আকবর রুনা, মিনি খান, শারমী আখতার, মেহেরুন্নেসা হিয়া, শ্যামলী, রীনা, কিয়া মাসুদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৩
এসএমএকে/আরবি