লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে আলোচিত যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান এবং ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জেহাদীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার জন্য আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কাছে সুপারিশ করা হয়।
অব্যাহতিপত্রে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব স্বাক্ষর করেন। এর অনুলিপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
আবুল কাশেম জেহাদী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। এর আগে তিনি ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তার বিরুদ্ধে গত দুই যুগ ধরে হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ছিল। গত ২৫ এপ্রিল রাতে রাকিব-নোমান হত্যা মামলার প্রধান আসামি তিনি।
বুধবার (১৭ মে) রাত ৯টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী বাংলানিউজকে অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কাশেম জেহাদীকে দেওয়া অব্যাহতিপত্রে ১৫ দিন আগের তারিখ উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, দলে কোনো খুনি বা ডাকাতের স্থান নেই। আগেই আমরা কাশেম জেহাদীকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে জেলা নেতাদের অনুমতি পেয়ে আমরা ওই অব্যাহতিপত্র আজকে (১৭ মে) প্রকাশ করি। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে দলের সভানেত্রী বরাবর পত্রটি পাঠানো হয়েছে।
অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করা হয়- আবুল কাশেম জেহাদীর বিরুদ্ধে নোমান-রাকিব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বিধায় তাকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় আবুল কাশেম জেহাদীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশসহ কেন্দ্রে পাঠানো হলো।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুরের পোদ্দার বাজারে গত ২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম। এ ঘটনায় যুবলীগ নেতা নোমানের বড় ভাই বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও বশিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং একটি অস্ত্রধারী বাহিনী প্রধান আবুল কাশেম জেহাদীকে প্রধান আসামি করে আরও ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১৪-১৫ জনকে আসামি করা হয়।
বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন কেন্দ্রীক এবং আভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়েছে বলে জানান মামালার বাদী।
হত্যার ঘটনায় পুলিশ এবং র্যাবের অভিযানে এ পর্যন্ত ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত আবুল কাশেম জেহাদীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৩
আরএ