ঢাকা: জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ কক্সবাজারের চকরিয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে গ্রামে-পাড়া-মহল্লায় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করতে হবে। মতভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে এখনই নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
শনিবার (২৭ মে) কক্সবাজারের চকরিয়ার ‘সাম্পান’ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টির বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয় কমিটির মতবিনিময় সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
এ সময় স্থানীয় চকরিয়া-পেকুয়া কক্সবাজার-১ আসনে শামসুল আলমকে দলীয় ও নির্বাচনী কর্মকাণ্ড জোরদার করার নির্দেশনাও দেন রওশন এরশাদ।
তিনি বলেন, তোমাদের পাশে আমি আছি, আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। তোমরা আমার সন্তান, তোমাদের দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছি মামুন-দয়াল ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয় কমিটিকে। তোমরা মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাও, ইনশাআল্লাহ আমাদের বিজয় হবে।
এ সময় বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মামুনূর রশীদ বলেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র ষড়যন্ত্রের হোতাদের মুখে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের কথা মানায় না। এদেশের মানুষ এখনো ভুলে যায়নি রাতের আঁধারে সাতকানিয়ায় কাদের মদদে, সেদিন বিশাল অবৈধ অস্ত্রের চালান খালাসের চেষ্টা করা হয়েছিল। সৎ পুলিশ অফিসার ও গ্রামবাসীর চক্ষু আড়াল করে কারা সেদিন বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, পল্লীবন্ধুর শাসনামলে এমন ঘটনা কখনই ঘটেনি। মনে রাখবেন বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নয়। কেউ এসে আপনাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে সেই সুযোগ নেই। এটা সেটা জারি করে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, বর্ডার লেস বিশ্ব গণমাধ্যম এখন গণতন্ত্র রক্ষার অতন্ত্র প্রহরী।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কাজী মামুন বলেন, সবে তো সংসদের বাইরে, রাজনীতির বাইরে নিক্ষিপ্ত হওয়া থেকে সরে আসুন। প্রভুদের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না, নির্বাচনে এসে যাচাই করুন, জনগণ গাম্বা বাণিজ্য সমর্থন করে কিনা?
তিনি বলেন, ভাঙচুর ও জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি জনগণ এখন আর বিশ্বাস করে না। পল্লীবন্ধু কখনই এ ধরনের রাজনীতি সমর্থন করেননি। মানুষ এখন প্রতিনিয়ত জীবন জীবিকার লড়াইয়ে ব্যস্ত। জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন। দেখবেন গণতন্ত্র অনেক সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পথে হাঁটছে।
কাজী মামুন বলেন, বড় দেশ বা বিশ্ব শক্তি বলে সম্মান দেখানো হয়, কিন্তু তাই বলে আপনারা আমাদের প্রভু নন। একাত্তরে বিশ্ব শক্তির বিরোধিতার মুখে নয় মাসের স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বাঙালি জাতি, ‘লায় পেয়ে কেউ মাথায় উঠে গেলে তাকে মুড়িয়ে মাটিতে নামাতে জানে। ’
কক্সবাজার জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবু ওমর মো. ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক এম এ গোফরান, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, কেন্দ্রীয় সদস্য দয়াল কুমার বড়ুয়া, চকরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাজী বশিরুল আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য নাফিস মাহবুব, বান্দরবান জেলা জাপার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাজী নাসিরুল আলম, কক্সবাজার জেলা জাপার ও কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য মো. শামসুল আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আজিজ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল কাদের জুয়েল, আক্তার হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম জহির উদ্দিন ও জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মাস্টার সফিকুর রহমানসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
এসএমএকে/আরআইএস