ঢাকা: বিভক্তি ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়েই আগামী ১০ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণঅধিকার পরিষদের জাতীয় কাউন্সিল।
আর এই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের নবজাগরণ ঘটবে বলে জানিয়েছেন দলটির একাংশের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
তিনি বলেছেন, আগামী ১০ জুলাই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের নবজাগরণ ঘটবে৷ বেইমান-মীর জাফর- মোস্তাকরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে হারিয়ে যাবে। দুই-চারদিন টেলিভিশন টকশোতে এরা কথা বলবে। এরপর আর এদের পাত্তা থাকবে না।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে একইদিন সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে নুরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে গণঅধিকার পরিষদের আরেকাংশের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার সমর্থকরা।
সেখানে লিখিত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, গত ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে নুরুল হক নুরের সব তৎপরতা দলীয় গঠনতন্ত্রের এবং মূলনীতির পরিপন্থি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ড. রেজা কিবরিয়ার কথিত অপসারণ সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ অপসারণ প্রক্রিয়াকে সমর্থন করি না এবং তিনি দলের আহ্বায়ক হিসেবে বহাল আছেন বলে মনে করি। সেই সঙ্গে আমরা ঘোষণা করতে চাই, ড. রেজা কিবরিয়াকে বাদ দিয়ে যারা কাউন্সিলের দিন নির্ধারণ করেছেন তারা পরিকল্পিতভাবে দলকে ভাঙনের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নুর সাংবাদিকদের বলেন, স্যোশাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমে আসার জন্য অনেকে বেফাঁস কথা বলেন। কারণ অনেকে জানে ভিপি নুরের কাউন্টারে একটি বক্তব্য দিলে বা বিরুদ্ধে কিছু বললে পত্রপত্রিকা লুফে নিবে। সে কারণে অনেকে বেফাঁস মন্তব্য ও বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা নানা ধরনের খেলা খেলছে। বিভিন্ন দলকে ভাঙতে সেসব দলের দলছুট-পদবঞ্চিত নেতাদের কোরবানির পশুর মতো টাকা দিয়ে কিনছে নির্বাচনে নেওয়ার জন্য বা সরকারের পক্ষে কাজ করার জন্য। গণঅধিকার পরিষদের একটি বড় কেন্দ্রীয় কার্যালয় আছে। আমরা সমস্ত সংবাদ সম্মেলন সেখানে করেছি। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সংবাদ সম্মেলন প্রেসক্লাবে করিনি। যারা কার্যালয়ে যেতে পারে না, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই, তারাই গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মী দাবি করে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা কি বলেছে সেটা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়।
তিনি আরো বলেন, শুরু থেকে আমরা একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে প্রথমে দলের আহ্বায়ককে অপসারণের চিঠি দিয়েছি, সাত দিনের ব্যাখ্যার সময় দিয়েছি, তারপর অপসারণ করেছি। আগামী ১০ জুলাই গণঅধিকার পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখন কিছু লোকজন বুঝতে পেরেছে, তারা সুবিধা করতে পারবে না। তারা ষড়যন্ত্র করে অপতৎপরতা চালিয়ে নেতাকর্মীদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদে তাদের ভবিষ্যৎ নেই। তাই তারা গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে টাকা পয়সা নিয়ে গণঅধিকার পরিষদকে ভাঙার জন্য কাজ করছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷ এদের পেছনে গোয়েন্দা সংস্থা আছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ এবং একে অন্যকে বহিষ্কার ও অব্যাহতির মতো ঘটনা ঘটছে গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে। এতে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে রাজনৈতিক এই দলটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ