ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার মধ্যযুগীয় ‘ডাইনি শিকার’ নীতি নিয়েছে: রিজভী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২৩
সরকার মধ্যযুগীয় ‘ডাইনি শিকার’ নীতি নিয়েছে: রিজভী

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকার এখন মধ্যযুগীয় ‘ডাইনি শিকার’ নীতি গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, মধ্যযুগে ইউরোপে যেমন নারীদের ডাইনি হিসেবে অভিহিত করে হত্যা, জুলুম, নির্যাতন করা হতো, ঠিক তেমনি বাংলাদেশে বিএনপি এবং গণতন্ত্রকামী বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষদের অবরুদ্ধ করে নানা কায়দায় নারকীয় নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

যতই এক দফার আন্দোলন দ্রুতগতিতে ধাবিত হচ্ছে ততই শেখ হাসিনার আগ্নেয়গিরির অগ্নুদ্গমের ন্যায় ক্রোধাগ্নি জ্বলে উঠছে।

এই সরকার বাংলাদেশকে বিরোধীদল-শূন্য প্রান্তরে পরিণত করতে চায় উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এই কারণেই ‘৭৫ এর বাকশালের সুযোগ্য উত্তরাধিকার হিসাবে শেখ হাসিনার নব্য বাকশালী শাসনে দেশ এক সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এদের প্রলয়ংকারী দুঃশাসনের আঘাতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সকল বৈশিষ্ট্যকে মুছে দেওয়া নিশ্চিত করতেই আবারও বিরোধী নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার ও কারান্তরীণ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ‘গণতন্ত্রের মা’ বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী এবং দেশনায়ক তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনীকে সাজা দেওয়ার পরেও নিজেরা স্বস্তি পাচ্ছে না, অজানা আতঙ্কে ভুগছে। তাদের গদি এখন নড়বড়ে অবস্থায়, যেকোন সময় হুড়মুড় করে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় গুম, গ্রেপ্তার এবং জামিন না দিয়ে কারাগারে আটকিয়ে রাখার মতো অমানবিক আচরণে লিপ্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগ কখনোই সদিচ্ছাপ্রসূত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করেনি।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় এসেই ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য নিজেদেরকে নানামুখী চক্রান্তে নিয়োজিত রাখে। ইতোমধ্যে বিএনপির কর্মসূচিতে বিপুল লোক সমাগম হওয়ায় অবৈধ সরকার বিচলিত হয়ে গভীর চক্রান্তে মেতে উঠেছে। একদিকে রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে বিরোধী দলের কর্মসূচিকে নৃশংস পন্থায় করা বানচাল করা অন্যদিকে পর্দার আড়ালে গণতন্ত্রের সর্বশেষ নাম নিশানা মুছে দিতে চলছে সর্বনাশা চক্রান্তের নানামুখী রোডম্যাপ। তাই এরা এখন গায়েবি মামলা কিংবা মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তার করার নতুন তামাশা শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকার বিএনপি’র যেসব নেতৃবৃন্দ জনপ্রিয়, বারবার সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন এবং আগামী নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন এ ধরনের নেতৃবৃন্দকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতে গ্রেপ্তার ও মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে। এটি বিএনপির জনপ্রিয় নেতৃবৃন্দকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের স্বীয় উদ্দেশ্য হাসিলে অবৈধ সরকারের একটি হীন কৌশল।

রিজভী বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পাতা ফাঁদে কেউ পা দেবে না। শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী মানুষের অঙ্গীকার কখনোই নিস্ফল হবে না। এই নিষ্ঠুর সরকার ক্ষমতায় থাকলে জাতির দুর্দিন কখনোই শেষ হবে না। চরম মুদ্রাস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা থাকছে না। মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষরা নিজেদের আয় দিয়ে পেট ভরানোর মতো খাবার কিনতে পারছে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা.রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু, কৃষকদলের যুগ্ম-সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২৩
টিএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।