ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক, পদ হারালেন পাবনার ৭ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৩
সাঈদীর মৃত্যুতে শোক, পদ হারালেন পাবনার ৭ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী

পাবনা: মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা ও সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় পাবনায় ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

এর আগে দুপুরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ ও সাধারণ রাব্বিউল ইসলাম সীমান্ত স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

একই সঙ্গে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদে সুপারিশ করা হয়।

সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলেন-পাবনা সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শেখ রকি, গয়েশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন খান, চাটমোহরের ফৈলজানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক মামুন হোসেন, আতাইকুলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিক খান, আতাইকুলা থানার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী রাকিবুল হাসান ও বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স।

এদিকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্য শোক প্রকাশ করায় আপত্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক শেখ রকি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।  

তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, প্রিয় ভাঁড়ারা ইউনিয়নবাসী। আমি মুসলমান হয়ে একজন মুসলমান মারা যাওয়াতে যদি ইন্না-লিল্লাহ বলতে না পারি, ওই সংগঠন আমার দরকার নেই। আমি নিজ ইচ্ছায় আজ থেকে ভাঁড়ারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। ভালো থাকবেন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

এ বিষয়ে রকির বলেন, সাঈদীর মৃত্যুর পরে শোক জানিয়ে তাৎক্ষণিক ফেসবুকে পোস্ট দিই। শুধু তাই নয়, আমরা যে চারজন একসঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি, ওরাও সাঈদী সাহেবের জন্য শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়। এসব পোস্ট দেওয়ায় ওদের তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর নেতাকর্মী বলতে লাগল আমাকেও নাকি বহিষ্কার করা হবে। চিন্তা করলাম বহিষ্কার করলে কেমন হয়, এর আগে নিজে থেকেই পদত্যাগ করি। এজন্য আমি পদত্যাগ করেছি।  

পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। তাকে নিয়ে ছাত্রলীগের নামধারী কয়েকজন নেতাকর্মী শোক জানিয়ে পোস্ট দেয়। এটা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী। বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ছাত্রলীগ এমন নীতি আদর্শহীন কাজ কোনোভাবেই করতে পারে না। মূলত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরামর্শেই তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সময়ে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত এলে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হবে। এ জেলায় আরও কোনো নেতাকর্মী যদি পোস্ট দিয়ে থাকে, আমাদের নজরে এলে তাদেরও বহিষ্কার করা হবে।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।  

এর আগে বুকে ব্যথার কারণে রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে বিএসএমএমইউয়ে ভর্তি করা হয় সাঈদীকে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।