ঢাকা: কোনো টালবাহানা না করে সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোজা কথা না শুনলে রাজপথে ফয়সালা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, কোনো টালবাহানা করবেন না। দেশের মানুষ আর শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ধোলাইখালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। ‘অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও একদফা দাবিতে’ এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এত চুরি করেছে, এত লুটপাট করেছে— শুধু আওয়ামী লীগের লোকেরা নয়, এই সরকারকে সহযোগিতা দিতে গিয়ে প্রশাসনের কিছু কিছু লোকও করেছেন। এখন বালু খাওয়া শুরু করেছে। চাঁদপুরে ৬ হাজার কোটি টাকার বালু খেয়ে ফেলেছে! এটা আমার কথা নয়, নদী কমিশনারের কথা।
তিনি বলেন, আজকে জাতি চরম ক্রান্তিলগ্নে পৌঁছেছে। আর এই সরকার সহজে কথা শুনবে না। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এবং তরঙ্গের উপর তরঙ্গ সৃষ্টি করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তাদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এই শপথ আজকে আমাদের নিতে হবে। আর এখন একটাই লক্ষ্য, সোজা কথা না শুনলে ফয়সালা হবে রাজপথে।
এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার না। এই সরকার শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, জোর করে দুই দুইবার নির্বাচনের প্রহসন ও তামাশা করে ক্ষমতায় বসে আছে। আবার তারা সব আটঘাট বেঁধে ২০২৪ সালে আরেকটা নির্বাচন করতে যাচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে সরকার ভয় পায়। কিন্তু তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া দরকার। তিনি তো রাজনীতি করার জন্য মুক্তি চাচ্ছেন না। সরকার ভুল করেছে, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা না করালে আপনারা পালানোর পথও খুঁজে পাবেন না। খোদা না করুক, তার কিছু হলে কারো কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না। তাৎক্ষণিক আমরা রাজপথে নেমে পড়ব।
দুপুর থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন, দলীয় পতাকাসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ধোলাইখালে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী। এ সময় নেতাকর্মীদের খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে গেছে।
এ দিন সমাবেশকে ঘিরে ধোলাইখালের সমাবেশস্থল এবং এই এলাকায় মোড়গুলোতে কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
টিএ/এমজেএফ