ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

হরতাল ডেকেছে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টিও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৩
হরতাল ডেকেছে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টিও

ঢাকা: শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি। ২০২৩-২০২৪ সালে জনগণের বিজয় নিশ্চিত হবে এবং শেখ হাসিনা সরকারের পরাজয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নেতারা।

তারা বলেন, শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গণতন্ত্রকামী জনতাকে পথে পথে বাধা, হামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। গণফোরামের প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মীসহ সারা দেশে অসংখ্যা জনগণকে গ্রেপ্তার করেছে।

মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। জামায়াতও একই কর্মসূচি দিয়েছে।

গণফোরাম সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী আওয়ামী সরকারের এই নৈরাজ্যের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।

এর আগে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে “এক দফা” শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ ২৮ অক্টোবর গণফোরাম চত্বরে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির উদ্যোগে জন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জন সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সনে কোনো ভোট হয়নি, ২০১৮ সনে বলেছিলেন আমাকে বিশ্বাস করুন আমি প্রতারণা করব না। কিন্তু শেখ হাসিনা পুরো জাতীর সাথে প্রতারণা করে রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার প্রতারক সরকার, জনগণ আর তাদেরকে এক মুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আমরা একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চাই, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, একটা দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। ২০২৩-২০২৪ জনগণের বিজয় নিশ্চিত হবে এবং শেখ হাসিনা সরকারের পরাজয় হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী বলেন, জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেবেন না কিন্তু দেখেন জামায়াত পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ঠিকই সমাবেশ করছে! প্রশাসন কিছুই করতে পারে নাই। আজকে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের যে সমাগম ঘটেছে তাতেই বোঝা যায় সরকারের কোনো সমর্থন নাই। আমরা এই সমাবেশ থেকে অবিলম্বে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম. জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন- আওয়ামী লীগ সরকারের উপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। এমনকি আওয়ামী লীগের ও এদেশের জনগণের ওপর কোনো আস্থা নেই, তাদের একমাত্র ভরসা দিল্লি। এখন দিল্লিও বুঝে গেছে এদেশের জনগণ আওয়ামী সরকারকে চায় না। অতএব রাতের ভোটের অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের দিন শেষ, এবার হবে জনগণের বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির মহাসচিব মোঃ আবদুল কাদের বলেন, প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ হুমকি ধমকীর পরেও, পথে পথে বাধা সৃষ্টি করার পরেও লাখো লাখো মানুষ আজ ঢাকার রাজপথ দখল করে নিয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় ১৫ বছরের দুঃশাসন থেকে জনগণ মুক্তি চায়। জনগণ টানেল চায় না, জনগণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ চায় না, জনগণ ভাতের অধিকার চায়, জনগণ ভোটের অধিকার চায়। এতো এতো উন্নয়ন করার পরও সরকার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায় কারণ সরকার জানে মুখে মুখে যতই বুলি আওড়াচ্ছেন সবই ফাঁকা। সরকারের ভিত নড়ে গেছে, সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ২০টা সিটও পাবে না। তাই ২০১৪ এবং ২০১৮ সনের মতো নীল নকশার নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। তবে জনগণ তাদের এই খায়েশ মিটতে দিবে না, জনগণ তাদের দাবি আদায় করেই ঘরে যাবে ইনশা-আল্লাহ।

আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরাম সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা হাসান, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, ঢাকা জেলা গণফোরামের সভাপতি আব্দুল হামিদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবুর রহমান বুলু, সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম.এ. কাদের মার্শাল, সাধারণ সম্পাদক এরশাদ জাহান সুমন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজম রুপু, কামাল উদ্দিন সুমন, মাহফুজুর রহমান মাসুম, ফারুক হোসেন, নূরনবী, আনোয়ার ইব্রাহীম, এশেক আলী আশিক সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান পারভীন নাসের খান ভাসানী, প্রেসিডিয়াম মেম্বার এডভোকেট জসিম উদ্দিন, নাজমা আক্তার, মোঃ আলমগীর হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জসিম সরদার, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুর চাকলাদার ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ লিটন জোয়ার্দার সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৩
জিসিজি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।