ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফেনীতে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৩
ফেনীতে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা

ফেনী: ফেনীতে পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে ঘর-বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্র গা ডাকা দিয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী-শিবিরের নেতাকর্মীরা। ঘর ছাড়তে নির্দেশনা এসেছে দল থেকেও।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাতে বিএনপির ফেনী পৌর কমিটির অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এমন নির্দেশনা দেন।  

তিনি লেখেন, ‘সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আজ থেকে বাংলাদেশের সব থানায় সর্বোচ্চ অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা এমনকি তৃণমূলের নেতা থেকে কর্মী পর্যন্ত সবাইকে নিজ ঘরে না থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আপনি সতর্ক থাকুন এবং দলের ভাই-বোনদের ও সতর্ক করুন। ’ 

এদিকে ফেনীতে ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে একদিনেই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আটটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ১৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মীকে।  

পুলিশ সূত্র জানায়, ফেনী মডেল থানার চারটি মামলায় ৭৯ জনকে, দাগনভূঞা থানায় একটি মামলায় ২৮ জনকে, সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলায় ১৪ জনকে, ছাগলনাইয়া থানায় একটি মামলায় ১১ জনকে এবং ফুলগাজী থানায় একটি মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, রোববার (২৯ অক্টোবর) হরতাল চলাকালে শহরের ইসলামপুর রোডে পুলিশকে উদ্দেশ্যে করে ককটেল ছোড়েন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় পুলিশ ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, গত রোববার হরতালে ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে ২৮ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামি করে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম বাংলানিউজকে জানান, হরতালে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নাশকতার অভিযোগ পুলিশের দায়ের করা মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বাংলানিউজকে জানান, হরতালে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে ১১ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় এজহারনামীয় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম বাংলানিউজকে জানান, হরতালে নাশকতার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, জেলার সব থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে আসার পর থেকে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জেলাজুড়ে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছেন। আজকে তারা নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।  

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, নিরপরাধ নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এভাবে হামলা, মামলা বা গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে এ সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। গ্রেপ্তারকৃত সব নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  আগামীকাল থেকে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধে সব ধরনের নাশকতা ঠেকাতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ কাজ করছে।

ঢাকায় বিএনপি-জামায়াতের মহ সমাবেশের পর হরতাল-অবরোধের কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। জেলায় জেলায় হচ্ছে নেতাকর্মীদের নামে মামলা। এসব ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। আর বেশির ভাগ মামলার আসামি করা হয়েছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের নাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৩ 
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।