ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

কাঁচিকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়াল ঈগল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
কাঁচিকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়াল ঈগল

রাজশাহী: অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান। কয়েকদিন আগে প্রচার-প্রচারণার জন্য তাকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছিলেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

কিন্তু এ আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য প্রচারণা শুরুর পর সপ্তাহ না পেরুতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন এ প্রার্থী।  

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেন। এ সময় প্রকাশ্যেই সমর্থন জানান প্রতিদ্বন্দ্বী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীকে।

রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামান (ঈগল)। এ সময় তিনি অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীকে (কাঁচি) সমর্থন দিয়ে সরে গেলেন বলে জানান।

আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলাম। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, নির্বাচন কমিশন এবং হাইকোর্টে আমার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্টে মনোনয়ন ফেরত পাওয়ার পরে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করি। আমার নির্বাচনী প্রতীক ঈগল। তবে নির্বাচনী কার্যকলাপে গিয়ে আমার উপলব্ধি হয়েছে যে, আমার উদ্দেশ্য ও গোলাম রাব্বানীর (যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন) উদ্দেশ্য একই। আর সেটি হলো গোদাগাড়ী-তানোরকে রাহুমুক্ত করতে হবে। সেই জায়গায় আমার উপলব্ধি হয়েছে আমরা দুজন যদি প্রতিযোগিতা করতে যাই তাহলে রাহুমুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। সেই জায়গায় গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের পথ চলা। তিনি আমার বয়সে বড় এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি মনোয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। সেক্ষেত্রে আমার উপলব্ধি হয়েছে আমি তাকে ছেড়ে দিলে তিনি সংসদ সদস্য হতে পারবেন। যেহেতু উনি আমার বড় ভাই, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এটা প্রত্যাশা করে আছেন। তাই আমার উপলব্ধি হয়েছে তাকে সম্মান জানিয়ে আমার এ জায়গা থেকে সরে আসা দরকার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গোদাগাড়ী-তানোরবাসীর চাহিদা মোতাবেক আমি আজ নির্বাচন থেকে সরে আসলাম। আমি আমার সর্বোচ্চ মেধা, শ্রম ও আমার নেতা-কর্মীসহ গোলাম রাব্বানীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাকে জয়যুক্ত করার জন্য চেষ্টা করবো। আমি বিশ্বাস করি, গোদাগাড়ী-তানোরবাসী আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি গোলাম রাব্বানীর ‘কাঁচি’ প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করবে।

আখতারুজ্জামান বলেন, যেহেতু প্রতীক বরাদ্দের পর আর কোনো প্রার্থী আইনগতভাবে প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তাই আপনাদের মাধ্যমে আমার নির্বাচন থেকে সরে এসে কাঁচি প্রতীকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরলাম।

এদিকে মো. আখতারুজ্জামানের এমন ঘোষণার পর এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ বলেন, ১৭ ডিসেম্বরের পর অফিসিয়ালি আর কোনো প্রার্থীর নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। কোনো প্রার্থী কারও সমর্থনে প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলে সেটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে নির্বাচনী ব্যালটে তার নাম ও প্রতীক থাকবে।

এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্ট থেকে নির্বাচনে প্রার্থিতা ফেরত পান আওয়ামী লীগ নেতা মো. আখতারুজ্জামান। পরদিন ২২ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তাকে ‘ঈগল’ প্রতীক বরাদ্দ দেন। আর ওইদিন থেকেই আখতারুজ্জামান প্রচারণা শুরু করেছিলেন।

তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পরপর তিন মেয়াদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সবশেষ গত বছর জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন। মাত্র ৩২ ভোটে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবালের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।