সিলেট: দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরী (রুমা চক্রবর্তী)। সিলেটের ১৯টি সংসদীয় আসনে একমাত্র সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হিসেবে তাকে বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকেসহ দলের চূড়ান্ত হওয়া ৪৮ জন নারীর নাম ঘোষণা করেন।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৫৪৯ জনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
রুমা চক্রবর্তীর বর্ণাঢ্য জীবনী: রুমা চক্রবর্তী বিশ্বনাথ উপজেলার কালিগঞ্জের মৌজপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী ও মাতা সরুজু বালা রায় চৌধুরীর পাঁচ কন্যার মধ্যে তিনি চতুর্থ। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী সিলেট পৌরসভায় ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত (আমৃত্যু) এম. বি. ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অবিভক্ত ভারতে কাকা (চাচা) গিরিন্দ্র রায় চৌধুরী নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুর ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগদান করেন। গোপন বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি নিখোঁজ হন।
রুমা চক্রবর্তী একাত্তরে স্কুলছাত্রী ছিলেন। দেশের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এছাড়া আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করেন এই সাহসী নারী।
বিয়ের পর থেকে তিনি রুমা চক্রবর্তী হিসেবে পরিচিত। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী এবং মা সরজ বালা চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় তিনি নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকায় বড় বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করার কারণে তৎকালীন আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
রুমা মিরপুর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার প্রশিক্ষণ নেন। মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়েও নার্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে সহকারী সেবিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন৷ পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাঠের বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন কিশোরী রুমা রায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৮ জন প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। সিলেট থেকে দলটির মনোনয়ন পেয়েছেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা রায় চৌধুরী (রুমা চক্রবর্তী)।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। তিন দিনে মোট ১৫৪৯ ফরম বিক্রি করেছে দলটি। যা থেকে আয় হয়েছে সাত কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মূলত জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি। একেকটি রাজনৈতিক দল ছয়টি আসনের বিপরীতে একটি করে সংরক্ষিত নারী আসন পান। এ হিসেবে নিজেদের এবং স্বতন্ত্রদের সমর্থন পাওয়ায় আওয়ামী লীগ পাবে মোট ৪৮ আসন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
এনইউ/এসএম