ঢাকা: বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রতিটি গুমের পেছনে আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। বিভিন্ন সময় তাদের মুখ থেকেই এ কথা বেরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, এম ইলিয়াস আলীসহ সরকারের গুমের শিকার নেতা-কর্মীসহ সবাইকে অক্ষত অবস্থায় যার যার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। অন্যথায় একদিন প্রতিটি গুম-খুনের দায়ে বিচারের জন্য তৈরি হোন।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এম ইলিয়াস আলীর গুমের ১২ বৎসর পূর্ণ হলো। গুমের ঘটনার পর তাকে খুঁজে বের করার আশ্বাস ছিল লোক দেখানো। কারণ ওই সময় বিএনপির পাঁচ দিনের হরতাল ছিল। আর বিএনপির সে হরতাল ও আন্দোলন বন্ধ করার জন্যই ছিল ওই মিথ্যা আশ্বাস।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, সমাজে মানুষের মধ্যে ভয়, আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্যই গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। তাদের মূল লক্ষ্য বিরোধী কণ্ঠকে নির্মূল করা, দীর্ঘমেয়াদি ফ্যাসিবাদী শাসনকে নিষ্কণ্টক করা। এ সরকারের গোটা আমলেই অপহরণ-গুম-খুন-ক্রসফায়ার আর বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা জ্যামিতিক হারে বেড়েছে।
তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দেশ, গুম-খুনের দেশ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহাদুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদের হরিলুট, জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে ক্ষমতাঘনিষ্ঠ লোকজনদের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। গত দেড় দশক ধরে দেশের সম্পদের বিরাট অংশ দুবাই, কুয়ালালামপুর, ইউরোপে পাচার করা হয়েছে। এসব অনাচার জনচক্ষু থেকে সরিয়ে দিতে গুমের মতো নির্দয়-অমানবিক পন্থা অবলম্বন করেছে সরকার।
রিজভী বলেন, এ পর্যন্ত গুম হয়েছেন ৬৫০ জনের বেশি নেতাকর্মী। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত ১৫ বছরে ছয় শতাধিক মানুষ গুম হয়েছেন দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসহ জাতিসংঘ তাদের বিভিন্ন সেশনে বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বর্তমান সরকার এটা নিয়ে তাচ্ছিল্য করে আসছে। এ রকম অসংখ্য পরিসংখ্যান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে রয়েছে।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশে ভয়ের সংস্কৃতি চালু করেছে ভোট ডাকাত সরকার। কথা বলতে ভয় পাচ্ছে অনেকেই। গুম, খুন, অপহরণ আতঙ্কে দেশের গণতন্ত্রকামী প্রতিটি নাগরিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৪
টিএ/আরএইচ