রাজশাহী: আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলার মাটিতেই স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় চার নেতা সেদিন জীবন-মৃত্যুর ভয় করেননি।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মহানগরের জয় বাংলা চত্বরে (গণকপাড়া মোড়) আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীর পক্ষে থাকার আহ্বান জানান।
মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বিএনপি-জামায়াত এবং যারা এদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেননি, তারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা দেখেছি, যে পরাশক্তি এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা বিভিন্ন অপতৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন। নেত্রী শেখ হাসিনার বুদ্ধিমত্তায় সব ষড়যন্ত্র পরাজিত হয়েছে, তারা লেজ গুটিয়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবাইকে সাথে নিয়ে রাজশাহীকে আরও সুন্দর ও উন্নত করা হবে। মহানগরের আয়তন কয়েকগুণ বাড়াতে চাই।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে বলে দিয়েছেন, ‘নির্বাচিত হয়ে কেউ (এমপি) যেন মনে না করে যে এটা আমার প্রার্থী। আমার প্রার্থী মানেই দলের প্রার্থী। অতএব, তাকেই ভোট দাও। ’ এই কথাটি আপনারা (নেতাকর্মীরা) মানবেন না, বিশ্বাস করবেন না। কারণ বলা হয়েছে, যে গ্রহণযোগ্য, জনগণের কাছে জনপ্রিয়, মানুষের জন্য কাজ করেন, তার অধিকার আছে নির্বাচনে দাঁড়াবার। তাকে যদি লোকাল এমপি সমর্থন দেন, ভালো। না দিলে জনগণ যেটি সমর্থন দেয়, সেটিই আমরা নিতে চাই। আসুন, ভালো ব্যক্তিত্ব নিয়ে নির্বাচিত হয়ে আসুন। কারও চামচা হয়ে নয়, কারও অপকর্মের সঙ্গী হওয়ার জন্য নয়। ’
তিনি বলেন, আমরা ভালো মানুষ চাই, যে ভালো মানুষগুলো আগামী দিনে ৩০ বছর, ৪০ বছর নেতৃত্ব দেবেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হবেন, আগামীতে কোনো এক সময় এমপি হবেন, মন্ত্রী হবেন। তাদের পথটা সুগম করে দিতে চাই। দলের মধ্যে নির্বাচনের যে লড়াই, সে লড়াইটি গণতান্ত্রিক লড়াই। এই লড়াই আওয়ামী লীগ সমর্থন করেছে। দলের সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদক যেটি বলেছেন সেটিই আওয়ামী লীগের বক্তব্য। স্থানীয় কারও বক্তব্য আমরা শুনতে চাই না। '
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে বিশাল জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার, রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মুহা. আসাদুজ্জামান আসাদ।
জনসভা সঞ্চালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু।
জনসভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রায়হানুল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী, বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল মোমিন, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার আলী, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
এছাড়া জনসভায় মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ জেলার নয়টি উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
এসএস/এএটি