পিরোজপুর: পিরোজপুরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আরও এক বিএনপি নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া জেলা যুবদলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক মাসুদ ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহামুদুল হাসান শাহীনের বিরুদ্ধে লুটপাট ও চাঁদা দাবির অভিযোগ করা হয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।
সোমবার (১২ আগস্ট) এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন বিপ্লবকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে দলের জেলা আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ও সদস্য সচিব গাজী অহিদুজ্জামান লাভলু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, দলীয় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করার পর উপজেলা বিএনপির ওই নেতা স্থানীয় বিভিন্ন বাড়িতে হামলা ও লুটপাট করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ দিকে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক মাসুদের বিরুদ্ধে মো. আল আমীন হোসেন নামে স্থানীয় এক বালু ব্যবসায়ী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন। তিনি জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার ভান্ডারিয়া পৌর সভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. চান্দে আলী মিয়ার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এমদাদুল হক মাসুদ শেখ ও রাহাত শেখসহ ১০-১২ জন গত ৬ আগস্ট ফোনে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই দিন বিকেলে ওই ব্যবসায়ীর বালুর ড্রেজার আটকে তা মাসুদ শেখের বাড়ির পেছনে নদীতে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে। এসময় তার আট হাজার ফুট পাইপ আটকে রাখা হয়েছে। চাঁদার টাকা না দিলে তাকে ড্রেজারের সঙ্গে পানিতে ডুবিয়ে রাখার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব এমদাদুল হক মাসুদের ফোনে বার বার কল দিলেও তিনি রিসিভি করেননি।
এ ছাড়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহমুদুল হাসান শাহীনের বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেছেন ঢাকায় বৈসম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত তাওসীফ খান অন্তর। তিনি জেলার পৌর শহরের অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির খানের ছেলে। তিনি অভিযোগ করেন বলেন, আমাদের পরিবার কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকা সত্ত্বেও গত ৫ আগস্ট ছাত্রদল নেতা মুহমুদুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি দল আমাদের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করে। ভবনের নিচে থাকা প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। ঘরে থাকা এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও মায়ের ব্যবহৃত প্রায় পাঁচ ভড়ি সোনার গহনা এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র লুট করা হয়েছে। এতে বাধা দেওয়ায় বাবাকেও মারধর করা হয়।
এ ছাড়া ওই নেতার বিরুদ্ধে রাখি বেগম নামে এক গৃহবধূও লুটপাট ও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী ওই গৃহবধূর বাড়ি পৌর শহরের আলমকাঠীর বাইপাস এলাকায়। তিনি অভিযোগ করেন, তার পরিবারের কেউই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারপরও ৫ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহমুদুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে ২০-৩০ জনের একটি দল হামলা চালায়। এসময় ঘরে থাকা দুই লাখ টাকা ও দুই ভরি সোনার গহনা লুট করা হয়। এসময় তিনি তাদের জানান যে তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তারপরও তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করা হয়।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা মুহমুদুল হাসান শাহীন বলেন, ওই দিন তিনি ঘর থেকেও বের হননি। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৪
এসআই