ঢাকা, বুধবার, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৮ মে ২০২৫, ০০ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

বুধবার সকালে মুক্তি পেতে পারেন আজহার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:১৫, মে ২৭, ২০২৫
বুধবার সকালে মুক্তি পেতে পারেন আজহার এ টি এম আজহারুল ইসলাম

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ের অনুলিপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে। ফলে আগামীকাল বুধবার (২৭ মে) সকালে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার একেএএম মাসুম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছানোর পর সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এখন সেই নথি কারাগার থেকে হাসপাতালে পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে বুধবার সকালে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।

সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, রাত বেশি হয়ে যাওয়া ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আগামীকাল সকালে উনাকে মুক্তি দেওয়ার পুনরায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কেরানীগঞ্জ কারাগারের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম।

এর আগে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিল মঞ্জুর করে খালাসের রায় দেন।

রায়ে সর্বোচ্চ আদালত ২০১৪ সালে এ টি এম আজহারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় ও মৃত্যুদণ্ড বাতিল ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। এর আগে ৬ মে প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুল হালিম, মোবারক হোসাইন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ আরও অনেকে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে দুই, তিন ও চার নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। পাঁচ নম্বর অভিযোগে ২৫ বছর এবং ছয় নম্বর অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করে। আপিল বিভাগের রায়ে দুই, তিন, চার (সংখ্যাগরিষ্ঠ মত), এবং ছয় নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়, আর পাঁচ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়।

ওই দিন আসামিপক্ষে ছিলেন প্রয়াত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১৯ জুলাই এ টি এম আজহারুল ইসলাম আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন। ২৩ পৃষ্ঠার আবেদনে তিনি মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করেন।

পুনর্বিবেচনার শুনানি শেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে তার আপিলের অনুমতি দেয়। এরপর তিনি আপিল করেন।

এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।