ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২, ২৪ জুন ২০২৫, ২৭ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে?

আন্তজার্তিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:০৬, জুন ২৩, ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে?

মধ্যপ্রাচ্য—প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং ভূরাজনৈতিকভাবে অতি সংবেদনশীল এক অঞ্চল। এখানে দশকের পর দশক ধরে চলা দ্বন্দ্ব, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই অঞ্চলকে বৈশ্বিক রাজনীতির কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি তাদের বৈশ্বিক নিরাপত্তা নীতি ও জ্বালানি স্বার্থের অন্যতম প্রধান উপাদান।

বাহরাইন, কাতার, কুয়েত, সৌদি আরব, ইরাক, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটি শুধু যুদ্ধ পরিচালনার কেন্দ্র নয়; বরং প্রশিক্ষণ, নজরদারি, গোয়েন্দা আদান-প্রদান এবং কৌশলগত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

আসুন মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মূল সামরিক ঘাঁটির সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক: 

বাহরাইন
এখানে রয়েছে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর। এ বাহিনী উপসাগর, লোহিত সাগর, আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরের একটি বড় অংশে দায়িত্ব পালন করে।

কাতার
দোহা শহরের বাইরে মরুভূমিতে অবস্থিত ২৪ হেক্টর আয়তনের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)-এর ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার। এটি মিশর থেকে কাজাখস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল এলাকার মার্কিন সামরিক তৎপরতা পরিচালনা করে। এটিই মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি, যেখানে প্রায় ১০,০০০ সৈন্য অবস্থান করছে।

কুয়েত
এখানে রয়েছে বহু বিস্তৃত সামরিক স্থাপনা। এর মধ্যে রয়েছে:

ক্যাম্প আরিফজান: এটি ইউএস আর্মি সেন্ট্রাল-এর ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার।

আলি আল সালেম বিমানঘাঁটি: এটি ইরাক সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত এবং একাকী, রুক্ষ পরিবেশের কারণে পরিচিত “দ্য রক” নামে।

ক্যাম্প বুউরিং: এটি ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠিত। এটি ইরাক ও সিরিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনাদের জন্য এক ধরনের ট্রানজিট ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত 

আল ধাফরা বিমানঘাঁটি: আবুধাবির দক্ষিণে অবস্থিত এবং আমিরাতি বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি দায়েশ বা আইএস বিরুদ্ধে অভিযানে এবং গোয়েন্দা নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

জাবেল আলি বন্দর (দুবাই): যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক ঘাঁটি নয়, তবে এটি মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় নৌবন্দর যেখানে নিয়মিতভাবে বিমানবাহী রণতরীসহ অন্যান্য জাহাজ ভিড়ে।

ইরাক

আইন আল-আসাদ বিমানঘাঁটি: পশ্চিম আনবার প্রদেশে অবস্থিত। এটি ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা দেয় এবং ন্যাটো মিশনে অংশ নেয়। ২০২০ সালে ইরান এই ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে।

এরবিল বিমানঘাঁটি: ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত। এটি প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা আদান-প্রদান এবং সরবরাহ সমন্বয়ের মাধ্যমে মার্কিন ও জোট বাহিনীর অপারেশনকে সহায়তা করে।

সৌদি আরব

দেশটিতে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য সংখ্যা ছিল ২,৩২১। তারা সৌদি সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা এবং সামরিক বিমান চালনার সহায়তা দেয়।

প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটি: রিয়াদের দক্ষিণে প্রায় ৬০ কিমি দূরে অবস্থিত। এখানে প্যাট্রিয়ট মিসাইল ও থেড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন রয়েছে।

জর্ডান

মুওয়াফাক আল সালতি বিমানঘাঁটি: রাজধানী আম্মান থেকে ১০০ কিমি উত্তর-পূর্বে আজরাকে অবস্থিত। এটি মার্কিন ৩৩২তম এয়ার এক্সপেডিশনারি উইং-এর কেন্দ্র, যারা লেভান্ত অঞ্চলজুড়ে মিশনে নিয়োজিত।

সূত্র: টিআরটি

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।