ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩২, ২৫ জুন ২০২৫, ২৮ জিলহজ ১৪৪৬

রাজনীতি

মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়: জোনায়েদ সাকি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৪, জুন ২৪, ২০২৫
মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়: জোনায়েদ সাকি জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের কর্মসূচিতে জোনায়েদ সাকি। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়, শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে হাতিরপুলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা এবং দলের সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে জোনায়েদ সাকি বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা গভীর পরিতাপ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশে এক ধরনের মব তৈরি করে হামলা, অবমাননা, নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু হচ্ছে, এটা অত্যন্ত বিপদজনক। এর আগে সংখ্যায় কম এমন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপরে আক্রমণ হয়েছে, মাজারে আক্রমণ হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর আক্রমণ হয়েছে, বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর আক্রমণ হয়েছে। অভ্যুত্থানের ১০ মাস অতিবাহিত হলেও এসব ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর কোনো ভূমিকায় আমরা দেখতে পাইনি বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি থাকলেও নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এরকম পরিস্থিতিতে সরকারের এবং আইন শৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত সকল বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখতে চাই। শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারলে চলবে না, অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, সম্প্রতি ২০১৮ সালের নৈশ নির্বাচনের হোতা কে এম নুরুল হুদাকে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সামনে জুতার বাড়ি দেওয়া বা জুতার মালা গলায় পরানোর ঘটনা আমরা দেখলাম। বাংলাদেশে ১৪, ১৮ ও ২৪ সালের প্রহসনে নির্বাচনের পেছনে যারা ছিলেন তাদের প্রত্যেকেরই এসব নির্বাচনের ও গণতন্ত্র ধ্বংসের দায় আছে এবং তাদের সবাইকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু বিচারের আগেই মব সৃষ্টি করে তাদের হেনস্থাকরণের মাধ্যমে অপরাধীর বিমানবিকীকরণের যে উদাহরণ সৃষ্টি হচ্ছে তা মোটেই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কোনো দৃষ্টান্ত নয়। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা ন্যায়বিচার দেখতে চাই। বিচারের নামে কোনো প্রহসন কিংবা মব বিচার যাতে আর কোনোভাবেই চলতে না পারে সেজন্য সরকারকে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

জোনায়েদ সাকি গতকাল সোমবার জাতীয় নাগরিক পার্টির অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে এ বিষয়ে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে আহ্বান জানান। সুষ্ঠু তদন্ত না হলে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় না আনা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটার আরও সুযোগ তৈরি হবে বলেও তিনি জানান।

সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। তিনি দলের ৫ম জাতীয় সম্মেলন আগামী ১০-১২ অক্টোবর ও জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে উপলক্ষে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এগুলো হলো- ৪ জুলাই- জুলাই যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের সম্মিলন; ৫ জুলাই- গণসংহতি আন্দোলনের তরুণ জুলাই যোদ্ধাদের নতুন বাংলাদেশ ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় ও বিশেষ জাতীয় বর্ধিত সভা; ১৬ জুলাই- শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিবিজড়িত রংপুর জেলায় জুলাই সমাবেশ; ২৫ জুলাই- ঢাকায় জুলাই গণসমাবেশ; ১ আগস্ট- শহীদ জুলফিকার শাকিলের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকার মিরপুরে জুলাই সমাবেশ। ৪ আগস্ট- জুলাই-আগস্টের শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। এছাড়াও বিভিন্ন বন্ধু প্রতীম গণসংগঠসমূহ মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দিপক কুমার রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, জাতীয় পরিষদ সদস্য পপী রানী সরকার, তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।

আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।