ঢাকা: প্রত্যেক ঘরে ঘরে গণতন্ত্রের মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (৩১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট, দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জোট, বরেণ্য নাগরিক, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সাংবাদিকসহ জনগণের প্রতি গণতন্ত্রের মুক্তির দাবিতে মৌলিক, মানবাধিকার ও আইনের শাসন এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঐক্যবদ্ধভাবে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান তিনি।
দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এ আহবান জানিয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বিবৃতিতে বলেন, সংগ্রামী জনতার বিজয় অনিবার্য।
বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘অবৈধ’ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা গদি রক্ষা জন্য এবং ‘অবৈধ’ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার মানসে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন। দেশে গণতন্ত্রের নামে ‘মার্শাল ডেমোক্রেসি’ প্রবর্তন করেছেন। বর্তমানে দেশে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েমের পর ‘একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা’ প্রবর্তন করার মানসে এক ব্যক্তির ইচ্ছাকেই আইনের উৎসে পরিণত করা হচ্ছে। জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সকল অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। সভা-সমাবেশ ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ আরও অভিযোগ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘অবরুদ্ধ’ করা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়াকে। বস্তুত: সারাদেশের জনগণই আজ ‘অবরুদ্ধ’ এবং বাংলাদেশ নামের এই জনপদ ‘বিশাল কারাগারে’ পরিণত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার আবাসস্থল দলের চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়কে জনসভায় ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও ক্যাবল লাইনসহ সকল বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সরকারি দল ঘোষণা দিয়েছে, পানি, গ্যাস ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।
সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে এ রকম নজির কোথাও পাওয়া যাবে না বলে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিবৃতিতে অবিলম্বে বিছিন্ন বিদ্যুৎসহ সকল যোগাযোগ মাধ্যম পুন:স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দফতরকে আহবান জানান তিনি। অন্যথায় উদ্ভুত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে এবং এর পরিণতি শুভ হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি দেশ এবং বিশ্বের সকল মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীদের কাছে এ অবস্থা দেখতে আসতে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনুধাবন করে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহবান জানান।
তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তারসহ সারাদেশ থেকে গ্রেফতারকৃত বিএনপি ও জোটের সকল নেতাকর্মীর নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান।
গ্রেফতার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আন্দোলনের দাবানল দাউ দাউ করে জ্বলে উঠবে আরো তীব্র গতিতে। তিনি দেশের সকল মুক্তিকামী মানুষের বাড়ি-ঘরকে এখন আন্দোলনের সুতিকাগারে পরিণত করা ও প্রত্যেক ঘরে ঘরে গণতন্ত্রের মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলার আহবানও জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জানুযারি ৩১, ২০১৪