ঢাকা: ১৩তম দিনের প্রচারণায় পুরান ঢাকার কোতোয়ালি-সূত্রাপুর এলাকায় নেমেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন।
কর্মসূচিতে নিজস্ব প্রতীক ‘ইলিশ’ নিয়ে গণসংযোগ ও পথসভার কথা ছিল তার।
রোববার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটায় পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়ে গণসংযোগ ও পথসভা করার কথা ছিল সাঈদ খোকনের। এ লক্ষ্যে আগ থেকেই সেখানে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাঈদ খোকনের সমর্থকরা। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, সভাপতি মামুন ও সাধারণ সম্পাদক সোহেলের নেতৃত্বে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ, সোহওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ, ৪২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইয়ার মোহাম্মদের নেতৃত্বে একটি নির্বাচনী মিছিল, কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী মো. সেলিমের নেতাকর্মীদের মিছিল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাউন্সিলর প্রার্থী গাজী সরোয়ার হোসেন বাবুর নেতৃত্বে তার নেতাকর্মীদের মিছিল, ৪২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি মিছিল, কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মিছিল এসে রায়সাহেব বাজারে মিলিত হয়।
সূত্রাপুর ও কোতোয়ালির বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা এসব মিছিলের কারণে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয় আদালতপাড়া নামে খ্যাত রায়সাহেব বাজার চৌরাস্তা ও আশপাশের এলাকায়। যানজট সামাল দিতে বিপাকে পড়েন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। ভোগান্তি পোহাতে হয় অফিসগামী মানুষের।
সকাল এগারোটায় রায়সাহেব বাজার মোড়ে উপস্থিত হন সাঈদ খোকন। সে সময় ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে ১৫ মিনিট মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে গণসংযোগের জন্য জনসন রোডে প্রবেশ করেন। তার সামনে ও পেছনে দীর্ঘ মিছিল রাস্তার দু’পাশ দখল করে এগোচ্ছিলো। রাস্তার একপাশে সিএমএম আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, অপর পাশে ঢাকা জেলা পরিষদ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। দীর্ঘ মিছিলের কারণে সৃষ্ট যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন এসব অফিসের অফিসগামী মানুষ, আইনজীবী এমনকি হাসাপাতালের রোগীরাও। এ সময় একটি অ্যাম্বুলেন্সকে যানজটে আটকে পড়ে বিশেষ ‘সাইরেন’ বাজাতেও দেখা গেছে।
এ মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক ও কবি নজরুল কলেজের সামনে দিয়ে, ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ ও সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুল, সেন্ট গ্রেগরি স্কুলের সামনে হয়ে লক্ষীবাজারের ডিআইটি মার্কেটে সমাবেশে মিলিত হয়। মানুষের ভিড়ের সৃষ্ট যানজট ও রোদের তাপে স্কুল ফেরত ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এ সময় ডিআইটি মার্কেটের সামনে আগ থেকেই তৈরি করা প্যান্ডেলের নিচে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন সাঈদ খোকন।
তিনি বলেন, শুনেছি বিএনপি নেত্রী তাদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন। আমি এ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই। ঢাকাবাসী আমার সঙ্গে রয়েছেন। ঢাকাবাসীর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অর্ধশতাব্দীর চেয়ে বেশি সময়ের।
বিএনপি নেত্রীকে ‘মানুষ হত্যার নির্দেশদাতা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও তিনি নিরীহ মানুষ হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশেই পথচারীসহ নিরীহ মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ঢাকাবাসী শান্তিপ্রিয়, তারা কোনো হত্যার নির্দেশদাতাকে গ্রহণ করবেন না।
মির্জা আব্বাসকে ইঙ্গিত করে সাঈদ খোকন বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মেয়র-মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকার জন্য কী করেছেন! আপনারাই বিচার করবেন। অথচ আমার বাবা ঢাকার প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। তার উত্তরসূরি হিসেবে আমি তার দর্শন লালন করি। আপনারা একটিবারের জন্য হলেও আমাকে সুযোগ দিন। অন্তত পরীক্ষামূলক হলেও সুযোগ দিন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস এমপি, উপ-কমিটির সহ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার কবির, কাউন্সিলর প্রার্থী ইয়ার মোহাম্মদ, হাজী মো. সেলিম ও গাজী সরোয়ার হোসেন বাবু প্রমুখ।
৩০ মিনিট পরে একই মিছিল বাংলাবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়। দীর্ঘ যানজট তৈরি হওয়ায় মিছিলকারীদেরও ফিরে যেতে বেশ বেগ পেতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৫
এসইউজে/এএসআর