ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

এবার বিশ্বাস রক্ষায় প্রত্যয়ী উমা আশানুর হাসিনা

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৬
এবার বিশ্বাস রক্ষায় প্রত্যয়ী উমা আশানুর হাসিনা

ঢাকা: উমা চৌধুরী জলি, আশানুর বিশ্বাস, হাসিনা গাজী! ভোটারদের হৃদয় জিতে বিজয়ীর হাসি হাসছেন এ নতুন তিন মেয়র।
 
টানটান উত্তেজনার পৌরসভা নির্বাচনে জিতে পৌরমাতা হয়েছেন তারা, যথাক্রমে- নাটোর, বেলকুচি, তারাবো পৌরসভা নতুন করে গড়বেন।

যে বিশ্বাসে ভোটাররা তাদের বেছেছেন, সে বিশ্বাস এবার ধরে রাখার পালা।
 
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে তেমনই জানালেন সবাই।
 
বললেন- সফরটি কষ্টের ছিল, কিন্তু অর্জনের খুশির কাছে সে কষ্ট কিছুই নয়। এবার আমরা অর্জিত বিশ্বাস ধরে রাখতে চাই।

এজন্য এলাকার উন্নয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সহযোগিতা চাইবেন এবং তা পাবেন বলেও নিজেদের আশার কথা জানালেন তিনি।
 
মোবাইল ফোনের আলাপে জানালেন, তিনজনই কাটাচ্ছেন জীবনের ব্যস্ততম ও আনন্দের সময়। শত মানুষের অভিনন্দনে সিক্ত হচ্ছেন তারা।
 
নাটোর পৌরসভায় মোট ভোটার ৫৭ হাজার ২০৪ জন। ২৯ কেন্দ্রের সবক’টিতে ভোট নেওয়া হয়।
 
নৌকা প্রতীক নিয়ে উমা চৌধুরী পান ১৯ হাজার ২৬৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শেখ এমদাদুল হক আল মামুন পান ১৬ হাজার ২০৬ ভোট।
 
সবাইকে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে চান তিনি।
 
সাবেক এমপি শঙ্কর গোবিন্দ চৌধুরীর কন্যা উমা রাজনীতি ভালোবাসেন, পবিত্র জ্ঞান করেন। তাই এ সংশ্লিষ্ট সবকিছুই তার কাছে আন্তরিকতার।  
 
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার মোট ভোটার ৪৬ হাজার ৭১৮ জন। পুরুষ ২৪ হাজার ৩২৬ ও নারী ২২ হাজার ২৯২, কেন্দ্র ২৫টি।
 
ছয় পৌরসভার মধ্যে মেয়র পদে একমাত্র নারী প্রার্থী ছিলেন বেগম আশানুর বিশ্বাস। বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তিনি। সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী।
 
এর আগে দুই দফায় দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে মেয়র পদে লড়েন।
 
বাংলানিউজকে আশানুর বলেন, পৌরবাসীর বিশ্বাস ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
 
এছাড়া তিনি পৌর এলাকার মুকুন্দগাতি বাজারের যানজট দূর করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেবেন, পয়ঃনিষ্কাশন, তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করবেন। প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল করার স্বপ্নটাও এবার পূরণ করবেন জানিয়ে তিনি, যাতে ওইসব শিশু কর্মমুখী হতে পারে।
 
নবম শ্রেণীতেই বিয়ে হয়ে আশুনুরের, কিন্তু সংসারকে বোঝা ভাবেননি। সংসার, রাজনীতি- দুটোই করেছেন ভালোবেসে।
 
নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৪ হাজার ৬৬০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির হাজী জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া পেয়েছেন ৮ হাজার ১৭৫ ভোট।
 
নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে তার সম্পর্ক বেশ ভালো বলেও জানান আশানূর। আর এটি তার জন্য আশীর্বাদ হবে বলেও মনে করেন। প্রয়োজনে হাজী জামালের পরামর্শ নিয়ে পৌরবাসীর কাজ করার ইচ্ছা আশানুরের।
 
হাসিনা গাজীও একই চিন্তা করছেন। পৌরবাসী তার কথা বিশ্বাস করেছেন, শুনেছেন। এবার তাই হাসিনা তাদের বিশ্বাস রাখবেন, কথা শুনবেন।
 
পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসন, মাদক মুক্ত করা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর করা, শ্রমিকদের সহযোগিতা করা, শিক্ষায় অগ্রগতিসহ যেসব প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, সবকটি পূরণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে জানালেন তিনিও।
 
নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীরের (বীরপ্রতীক) স্ত্রী হাসিনা গাজী নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৮২১ ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৪৪ ভোট।
 
রূপগঞ্জ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনাও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে নিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চান।
 
পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৫ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৬, বিএনপির ১, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ৪ এবং স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন ৪ জন প্রার্থী।
 
সারাদেশের ৯৪৫ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১৫ জন ছিলেন নারী। জয় পেয়েছেন ৩ জন। শতাংশের হিসেবে খুব বেশি না হলেও আশাবাদীরা বলছেন, লক্ষণ খারাপ নয়।

কারণ ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সারাদেশ থেকে প্রথম ও একমাত্র নারী মেয়র হয়েছিলেন বাঘা-চারঘাটের নার্গিস খাতুন।
 
এবার যদিও জয় পাননি সাবেক এমপি রায়হানুল হক রায়হানের স্ত্রী নার্গিস, কিন্তু দেশের প্রথম নারী মেয়র হিসেবে সম্মানের জায়গাটিতে নিশ্চয়ই থাকবেন তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৫
এসকেএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।