ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

গণতন্ত্র হত্যা দিবস নয়, অনুতপ্ত দিবস পালন করুন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৬
গণতন্ত্র হত্যা দিবস নয়, অনুতপ্ত দিবস পালন করুন মাহবুব উল আলম হানিফ / ফাইল ফটো

ঢাকা: ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস নয়, ৫ জানুয়ারি বিএনপিকে ‘অনুতপ্ত দিবস’ পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। একইসঙ্গে এবারও যদি বিএনপি আন্দোলনের নামে নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে তবে তাদের জনগণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠিন শিক্ষা দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।



রোববার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হানিফ এ হুঁশিয়ারি দেন। ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত যৌথসভা শেষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, বিএম মোজাম্মেল হক, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভুইয়া ডাবলু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, কার্য নির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী, এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম আমিন, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।

হানিফ বলেন, বিএনপি কীসের জন্য কর্মসূচি দিয়েছে? গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করতে? তারা বলে, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। আসলে তারাই তো জনগণের ভোটাধিকার হরণ করার জন্য ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে জ্বালাও-পোড়াও করেছে, মানুষ হত্যা করেছে, নাশকতা চালিয়েছে। তাদের উচিত এই ভুল রাজনীতির জন্য অনুতপ্ত হওয়া। বিএনপি একটা কাজ করতে পারে, তারা এই দিবস পালন করতে পারে খালেদা জিয়া যে ভুল রাজনীতি করেছিলেন, তার জন্য ওই দিবসটাকে ভুল রাজনীতির ‘ভুল দিবস’ বা ‘অনুতপ্ত দিবস’ হিসেবে পালন করতে পারে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, নির্বাচন বর্জন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করা, জ্বালাও-পোড়াও-মানুষ হত্যা করার অধিকার বিএনপির নেই। তাদের উচিত ৫ জানুয়ারি ‘অনুতপ্ত দিবস’ পালন করা।

যৌথসভায় ৫ জানুয়ারি সারাদেশের জেলা-উপজেলায় আনন্দ ৠালি ও সমাবেশের কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার ১৮টি স্পটে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

সমাবেশ প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, শুনেছি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওইদিন কাউকে সমাবেশের অনুমতি দেবে না ডিএমপি। যদি তা না দেয় তবে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবো।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই সমাবেশের অনুমতি কবে চাওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ জানান, তারা ৩১ ডিসেম্বরেই অনুমতি চেয়েছেন।

হানিফ বলেন, গণতন্ত্রের বিজয় ধরে রাখার জন্য আমরা প্রতিবছরই এই দিনটাকে আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করতে চাই। সেভাবেই আমাদের কর্মসূচি নেওয়া আছে। গত বছরও আমরা এ দিবসটি উদযাপন করেছিলাম। আগামীতেও আরেকটি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি প্রতিবছর উদযাপন করবো। আওয়ামী লীগ কখনও গোলযোগ সৃষ্টি করে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চায় না। কারণ আওয়ামী লীগই তো ক্ষমতায়।

বিএনপিও দাবি করেছে, সমাবেশের জন্য তারা ৩১ ডিসেম্বর অনুমতি চেয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা মিথ্যা কথা, তারা গতকাল (শনিবার) অনুমতি চেয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি না পেলে বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি পাবে কিনা জানতে চাওয়া হলে হানিফ বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে ভাবি। বিএনপির রাজনীতি নিয়ে ভাবনার ইচ্ছে আমাদের নেই।

৫ জানুয়ারি বিএনপি  মাঠে নামলে আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিহত করবে কি-না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাদের প্রতিহত করবো? তারা কোথায়? তাদের অনুরোধ করবো, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা যে ভুল এবং অন্যায় করেছিল সেজন্য তারা অনুতপ্ত হোক। তাহলে হয়তো জাতি তাদের সহায়তা করতে পারে।

অপর এক প্রশ্নে উত্তরে হানিফ বলেন, গতবছর ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে তারা ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ নামে ৯০ দিন ধরে সন্ত্রাসী-নাশকতা কর্র্মকাণ্ড করেছিল। নির্বাচন প্রতিহত করতে তারা জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতা, মানুষ হত্যা করেছিলো। এরপরও খালেদা জিয়া যদি ভাবেন, গত বছরের মতো এবারও সন্ত্রাসী-নাশকতা কর্মকাণ্ড করবেন। তবে গতবার জনগণ যেভাবে তাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছিল, এবার তার চেয়ে আরও কঠোর শিক্ষা দেবে জনগণ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ব্যাপারে আমাদের দলীয় কোনো পরিকল্পনার দরকার নেই। আমরা শুধু দেখবো।

যৌথসভায় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা, দলের ঢাকার এমপি এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৬/আপডেট ১৯৩৪ ঘণ্টা
এসকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।