ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে ঢুকছেন তারা ৬ জন

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে ঢুকছেন তারা ৬ জন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ, অ্যাড. খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

ঢাকা:  বিএনপির আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বর্তমান কমিটির ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের ২ জন উপদেষ্টা জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন।
 
সূত্রমতে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ৩টি শূন্যপদ পূরণ ও ৩টি পদ পুর্নবিণ্যাসের জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নাম চূড়ান্ত করেছেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।


 
জাতীয় স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ ও পদ পুনর্বিন্যাসে  এই ছয় জনের ব্যাপারে লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও কোনো আপত্তি নেই।
 
সূত্রমতে, ব্যক্তিগত ইমেজ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা, পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে যোগাযোগ, দলে আইনজীবীদের মূল্যায়ন ও দলের প্রতি আনুগত্য-এই দিকগুলো আলাদাভাবে বিবেচনায় নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ স্থায়ী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এই ছয় জনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া।
 
বড় ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটলে আসন্ন কাউন্সিলে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে এই  ছয় জনের অন্তর্ভুক্তি প্রায় নিশ্চিত বলেই জানিয়েছে দলের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো।
 
২০১১ সালের ১৬ মার্চ বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে স্থায়ী কমিটিতে তার পদটি শূন্য হয়। গত ৫ বছরে এই পদে কাউকে নিয়োগ দেননি খালেদা জিয়া।
 
তবে স্থায়ী কমিটির বৈঠকগুলোতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত থাকতেন সব সময়।
 
সূত্রমতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মহাসচিব পদে নিয়োগ দিয়ে তাকে স্থায়ী করে নেওয়া হচ্ছে। ফলে মহাসচিব হিসেবে পদাধিকার বলেই জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হবেন তিনি।
 
এর বাইরে স্থায়ী কমিটিতেও রয়েছে আরও দুটি শূন্য পদ। তাও পূরণ হচ্ছে এই কাউন্সিলে।
 
সম্প্রতি বার্ধক্যজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেন দলের স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ড. আর এ গণি। তার পদটি ‍পূরণ করার জন্য খালেদা জিয়ার প্রথম পছন্দ বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বর্ষীয়াণ রাজনীতিক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।
 
ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, দলের প্রতি আনুগত্য বিবেচনায় রেখে বিএনপির স্থায়ী  কমিটিতে তাকে রাখার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া।
 
প্রবীণ এ রাজনীতিক দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসনের দেওয়া যে কোনও দায়িত্ব পালনেও প্রস্তুত।
 
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি এখনো নিজেকে একজন রাজনৈতিক কর্মী মনে করি। যে ক’দিন বেঁচে আছি মানুষের জন্য, দেশের জন্য সর্বপরি দলের জ্ন্য কাজ করে যেতে চাই। সুতরাং নেত্রী (খালেদা জিয়া) আমাকে যেখানেই রাখুন, সেখান থেকেই আমি কাজ করে যাব।
 
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অপর পদটি খালি হয় যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যাকর হওয়ার পর। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত নভেম্বর মাসে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যাকর করা হয়।
 
সূত্রমতে, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুতে দলের স্থায়ী কমিটির শূন্য হওয়া পদ ‍পূর্ণ করার জন্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানকে স্থায়ী কমিটিতে নিচ্ছেন খালেদা জিয়া।
 
জানা গেছে, শুধু শূন্যপদ পূর্ণ করার জন্য নয়, বিগত দিনগুলোতে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে নিজ এলাকা চট্টগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন ও দলের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের পুরস্কার হিসেবে দলের সর্বচ্চো নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন আব্দুল্লাহ আল নোমান। তাছাড়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী চট্টগ্রামের ছিলেন বলে চট্টগ্রাম থেকেই একজনকে এই ফোরামে নেওয়া হচ্ছে।
 
শুধু শূন্যপদ পূরণ নয়, জাতীয় স্থায়ী কমিটির কয়েকটি পদ পুনর্বিন্যাসেরও প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বিএনপিতে। আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলে অন্তত তিনটি পদ পুনর্বিন্যাস প্রায় নিশ্চিত।
 
সূত্রমতে, বার্ধক্যজনিত কারণে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, এম শামসুল ইসলাম ও সারওয়ারী রহমানকে বিশ্রাম দিতে চান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 
এই তিন জনসহ বর্তমান কমিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা প্রবীণ নেতাদের জন্য দলে সম্মানজক পদ সৃষ্টি করে তাদেরকে সেখানে রাখতে চান তিনি।
 
জানা গেছে, বর্ষীয়াণ  এই নেতাদের জায়গায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনকে স্থায়ী কমিটিতে স্থান দিচ্ছেন খালেদা জিয়া।
 
সূত্রমতে, সব কিছু ঠিক-ঠাক থাকলে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদাধিকার বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হবেন।
 
বাকি ১৬ জন সদস্য থাকছেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

বাংলাদেশ সময় ১৮৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৬
এজেড/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।