ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘এখন কেউ কিছু লিখতে পারে না, বলতে পারে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
‘এখন কেউ কিছু লিখতে পারে না, বলতে পারে না’ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ

গাজীপুর: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘আমাকে স্বৈরাচার বলা হয়। এখন কোন স্বৈরাচার দেশ পরিচালনা করছে ? কি ভাবে দেশ পরিচালনা করছে সবাই জানেন।

আমি কোন মানুষের ক্ষতি করিনি, হত্যা করিনি, আমার সময় কোন মানুষ গুম হয়নি, সংবাদপত্র আমার বিরুদ্ধে মুক্তভাবে লিখেছে। কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেইনি। এখন কেউ কিছু লিখতে পারে না, বলতে পারে না। সব কিছু এখন বন্ধ। আমরা বন্ধ কারাগারে বাস করছি। মুক্ত হতে হবে একদিন। নির্বাচনের মাধ্যমে মুক্ত হতে হবে। আমরা সে জন্য প্রস্তুত আছি। ‘

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এরশাদ বলেন, ‘বিএনপি আমাকে জেলে দিয়েছিল। তারা ১৪ বছর ৯ মাস পর আমার বিরুদ্ধে মঞ্জু হত্যার মামলা দিয়েছে। ২৫ বছর ধরে এ মামলা চলছে। ২৫ বছর একটি মামলা চলতে পারে না। আমি মুক্ত মানুষ নই, মুক্ত রাজনীতিবিদ নই। আমার মনে যে জোর আছে তাতে আমাকে কেউ বন্দি করে রাখতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘১/১১ কুশিলবদের বিচারের ব্যাপারে বিএনপি-আওয়ামী লীগ এক। মাইনাস টু এর ব্যাপারে বিএনপি আওয়ামী লীগ এক। এখানে মাইনাস থ্রি করা হয়েছিল, এ কথা কেউ বলে না। আমি মাইনাস থ্রি’র কথা বলি। সে সময় আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান থাকতে পারিনি। পার্টির কো-চেয়ারম্যান করা হয়েছিল ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলামকে। ষড়যন্ত্র করে আমাকে সরিয়ে দিয়ে তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। হাসিনা-খালেদাকে কেউ সরায়নি। আমাকে সরানো হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে আমার দলের লোক ষড়যন্ত্র করেছিল।
তিনি বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যারা আমাকে সরিয়ে দিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান হয়েছিল তাদের সঙ্গে হাত মিলানো উচিত না। ’

জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান জিএম কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ.বি.এম রুহুল আমিন হাওলাদার, পার্টির প্রেডিসিয়াম সদস্য এস.এম ফয়সাল চিশতী, সুনীল শুভ রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব মো. আরিফ খাঁন, বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, নূরুল ইসলাম নুরু, জহিরুল ইসলাম, জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, পার্টি চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী মেজর (অব.) খালিদ।

এরশাদ আরো বলেন, ‘যে দলটি আমাকে জেলে পাঠিয়েছিল তাদের অস্তিত্ব আজ টলটলয়মান। তাদের অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। তাদের অস্তিত্ব কেবল টিভিতে একটি বয়ান দেয়া। এর বাহিরে কিছু নেই। ’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে কোন বিভক্তি নেই। পার্টির জন্য আমার মতো কষ্ট আর কেউ করেনি। জেলখানায় থেকে সে সময় ৩৫টি আসনে নির্বাচিত হয়েছি। আমি একা ৫টিতে জয়ী হয়েছি। এতে প্রমাণিত হয় আমি নিন্দিত ছিলাম না। আমি নন্দিত ছিলাম। ’

সম্মেলন শেষে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়াকে সভাপতি ও জয়নাল আবেদীনকে সাধারণ সম্পাদক করে গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮,২০১৬
আরআই/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।